সকলকে ভুল প্রমাণ করে ১৫ বছরের মেয়েটাই হয়ে উঠেছিল সকলের প্রিয় রাণী মা! ‘রাণী রাসমণি’ চরিত্রটা দিতিপ্রিয়ার জীবনে মাইলস্টোন ছিল
জি বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় ধারাবাহিক ছিল ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’। এই মুহূর্তে টেলিভিশনের পর্দায় ইতি টেনেছে এই ধারাবাহিক। রাণী মা চলে গেলেও এতদিন ধারাবাহিকের পর্দায় চলছিল রাণী রাসমণির উত্তর পর্ব। এই ধারাবাহিকের প্রতিটি কলাকুশলীরা বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে নিজেদের অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে মনোরঞ্জন করেছেন অগণিত দর্শকদের।
তবে এই ধারাবাহিক যখন শুরু হয়েছিল তখন ধারাবাহিকের কর্মকর্তারা বিশেষ করে রিসার্চার শিবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিন্তার বিষয় ছিল একটাই, রাণী রাসমণির চরিত্রে কাকে পর্দার সামনে নিয়ে আসবেন তারা! কিন্তু তাদের যথেষ্ট সংশয় ছিল ১৫ বছর বয়সী ঐ রোগা করে মেয়েটি কি পারবে এই রাসভাড়ী মহিলার চরিত্রে অভিনয় করতে? তবে শেষপর্যন্ত অসাধ্যসাধন করেছিল ঐ মেয়েটিই। ধীরে ধীরে শুধুমাত্র দর্শকদের নয় সেটের সকলের প্রিয় রণী মা হয়ে উঠেছিলেন অভিনেত্রী।
এই প্রসঙ্গে শিবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তাকে ভুল প্রমাণ করে দেওয়ায় তিনি বেজায় খুশি হয়েছেন। এরপরে নিশ্চয়ই তার নাম আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। তিনি আর কেউ নন সকলের প্রিয় রাণী মা অর্থাৎ দিতিপ্রিয়া রায়। বর্তমানে তিনি অভিনয় করছেন একাধিক ছবি ও ওয়েব সিরিজে। এই মুহূর্তে টলিউডের অন্যতম সফল ও ব্যস্ত অভিনেত্রী তিনি।
২০১৭ থেকে একটানা এই ধারাবাহিকে অভিনয় করে গিয়েছেন দিতিপ্রিয়া। কৈশোর থেকে যৌবন পুরো সময়টাই কাটিয়েছেন এই রাণী রাসমণির সেটেই। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, গত তিন-চার বছরে এই সেটটাই তার জীবনের সব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আনন্দ হোক বা মজা কিংবা দুঃখ যেকোনো পরিস্থিতিতেই তার কাছে মুক্তির আকাশ ছিল রাণী রাসমণির সেট। শেষ দিনটা খুব কষ্ট হয়েছিল তার। কারণ এতদিন ধরে একটি চরিত্রকে ভালোভাবে জেনে অভিনয় করার পর সেই চরিত্রটার প্রতি একটা অদ্ভুত শ্রদ্ধা তৈরি হয়েছিল, যা ছেড়ে যেতে খুব স্বাভাবিকভাবেই কষ্ট হয়েছিল অভিনেত্রীর।
অভিনেত্রী এও জানিয়েছিলেন, শেষদিন সেটে যাওয়ার জন্য যখন তার কাছে ফোন এসেছিল সেইদিন অদ্ভুত অনুভূতি হয়েছিল তার। তিনি জানান, সেদিন কান্নার দৃশ্যের জন্য কারোর গ্লিসারিনের প্রয়োজন হয়নি। একেবারে স্বাভাবিক ভাবেই সকলে কেঁদে ফেলেছিলেন। এমনকি অভিনেত্রীর কথা থেকে জানা গিয়েছে, ক্যামেরার পিছনে যারা থাকতেন তাদের চোখও ভিজেছিল সেদিন। মাঝে সেই দৃশ্যের কিছু অফস্ক্রিন ঝলক ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায়। একেবারে এক হয়ে একটি পরিবারের মতো কাজ করতেন তারা, তা অভিনেত্রীর কথা থেকেই স্পষ্ট হয়েছে।