“বাড়ি থেকে বঁটি, মিক্সি, শিলনোড়া নিয়ে প্রথম পর্বের শ্যুটিং করেছিলাম আমরা” – রান্না ঘরের ৫,০০০ পর্ব পূর্তিতে পুরনো দিনের কথা স্মরণ করলেন সুদীপা
বর্তমানে জি বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় ম্যান ফিকশন শো হল “রান্নাঘর”। বিষয়ের সম্পূর্ণ সঞ্চালনার দায়িত্ব রয়েছে সুদীপা চ্যাটার্জির কাঁধে। এর আগে রান্নাঘরের সঞ্চালিকা নিজের কাজকর্মের দরুন তাকে অনেক সম্মুখীন হতে হয়। যেগুলি আমাদের সকলেরই জানা। কিন্তু আজকে সেসব কোন কথা নিয়ে আমরা আলোচনা করব না। আজকে আপনাদের জন্য আছে একটি খুশির খবর। দেখতে দেখতে ৫০০০ পর্ব অতিক্রম করে ফেলেছে জি বাংলার রান্নাঘর। আজ থেকে ১৭ বছর আগে শুরু হয় শো। ১৭ বছরে মোট ৫০০০ পর্ব। অঙ্ক বলছে মোট ৮১৬ সপ্তাহ,৬২০৫ দিন। তবে ছোটপর্দায় আমরা সকলেই জানি প্রায় প্রত্যেক মাসেই ধারাবাহিক টিকে থাকতে না পেরে বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে এতগুলো পর্বের পথ চলা মোটেই সহজ কথা নয়। পুরো বিষয়টি সত্যিই ভীষণ প্রশংসনীয়।
পুজোর মুখে এত বড় একটি জয়। একেতো পুজোর আমেজ তার ওপরে নিউটাউনের স্টুডিওতে পাঁচ হাজার পর্ব উদযাপন। সব মিলিয়ে বেশ জমজমাটি বিষয়। কেক কেটে, ইলিশ, চিংড়িতে জমে উঠেছে উদযাপন। কিন্তু উদযাপনের শিরোমনি যিনি সঞ্চালিকা। তাঁর কর্মজীবন থেকে ব্যক্তিগত জীবন সবেতেই এসেছে আমূল পরিবর্তন। মুখোপাধ্যায় থেকে চট্টোপাধ্যায় হওয়ার রাস্তাটাও বেশ লম্বা। তারপরে দু বছরের বিরতি মা হয়ে। কিন্তু এত সবকিছুর মধ্যে বদলাইনি শুধুমাত্র রান্নাঘরের সাথে সঞ্চালিকার সম্পর্ক।
এই বিশেষ দিনে নিজের জীবনের এত বড় দিনের উদযাপনে সুদীপা সঙ্গে থাকলে অনেক বিশিষ্ট সংবাদ মাধ্যমেরও। তিনি বললেন, “আমরা নিজেরাই জানতাম না ৫০০০ হাজার পর্ব ছুঁয়ে ফেলেছি। আমাদের সম্পাদক মনে করালেন”। জানা গিয়েছে আজকের যে রান্নাঘর আমরা দেখি আজ থেকে এতগুলো বছর আগে রান্নাঘর ঠিক তেমনটা ছিল না। ছোট বাথরুম মাপের ফ্লোর, নন এসি স্টুডিও থেকে আজকের রান্না ঘরের এই পথ চলা। সঞ্চালিকা আরো বলেন, “বাড়ি থেকে বঁটি, মিক্সি, শিলনোড়া নিয়ে প্রথম পর্বের শ্যুটিং করেছিলাম আমরা। কোনও সেলিব্রিটিই আসতে চাইতেন না। কেউই তখন আমাদের গুরুত্ব দিতেন না। তখন যাঁরা আমাদের হেয়ার, মেকআপ, ক্যামেরা করতেন, আজ তাঁরা অনেক উচ্চস্তরে”।
যে সময় আজকের এই রান্নাঘর শোটি শুরু হয় সেই শুরুর সময়টা ছিল বেশ চ্যালেঞ্জ যোগ্য। সেই সময় আজকের মত রান্নাঘর একা দাঁড়িয়ে ছিল না। আরো দুটি রান্নার শো ছিল যা যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল দর্শক মহলে। একটি রান্নাঘর শো এর সঞ্চালনা করতেন সুপ্রিয়া দেবী। আরেকটি রান্নাঘর শোএর সঞ্চালনা করতেন অভিনেতা তাপস পালের স্ত্রী নন্দিনী পাল। অতএব বুঝতেই পারছেন এর মধ্যে দিয়ে আরও একটি রান্নাঘরের শো তৈরি করা এবং সেটার সাফল্য আনা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের ছিল। সংবাদ পাঠের জায়গা থেকে রান্নাঘর শো এর সঞ্চালনা করছেন সুদীপা। পুরনো দিনে নিজেদের পরিকল্পনা সম্পর্কে সঞ্চালিকা বললেন, “সাধারণ মানুষও যে তারকাদের মতো টেলিভিশনে আসবেন, নিজেদের মনের কথা বলতে পারবেন, আমাদের সেই ভাবনাটাই কাজ করেছিল”।
কিন্তু এতগুলো দিন ছোট পর্দায় টিকে থাকা মোটেই সহজ কাজ নয়। বেশ ভালই প্রশংসাযোগ্য। কিন্তু ঠিক কিভাবে হলো এই জার্নি? এ বিষয়ে সঞ্চালিকা বলেন, “ছেলে হওয়ার জন্য যদিও দু’বছরের জন্য একটা বিরতি হয়েছিল, কিন্তু আমার ধারণা অপাদির (অপরাজিতা আঢ্য) হাত ধরে কেউ জিজ্ঞেস করতে পারবেন না, তোমার বর কেমন আছে? কিন্তু আমায় পারবেন। কারণ আমার মধ্যে পাশের বাড়ির মেয়ের গন্ধ পায় সবাই। তারকাদের হাত ধরে যেটা পাবেন না। আমি কাউকে ছোট করতে চাইছি না। এটা আমার ব্যক্তিগত ধারণা। তবে এত বছরে নিজের একটাই জিনিস লক্ষ করলাম, তখনও যেমন বোকা ছিলাম, এখনও তেমনটাই রয়ে গিয়েছি (হাসি)”। তবে আমাদের সকলেরই জানে যে সুদীপার বাড়িতে অনেক বড় করে লক্ষ্মীপূজো হয়। বর্তমানে সঞ্চালিকতার বাড়ির লক্ষ্মীপূজো নিয়ে বেশ ভাল রকম ব্যস্ত। পুজো কাটিয়ে আবার ফ্লোরে ফিরবেন এমনই পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।