ক্লাস সিক্সে প্রথম পুজোতে নিজের ক্রাশ কে খুঁজে পেয়েছিলাম, পুজোর আড্ডায় নিচে মধুমিতা সরকার জানালেন নিজের পুজোর প্রেমের গল্প
দুর্গাপুজো হলো প্রতিটি বাঙালির কাছে আলাদা একটা অনুভূতি। সারা বছর এই চারটি দিনের জন্যই অপেক্ষা করে থাকেন প্রতিটি বাঙালি। পূজার সময় খাওয়া-দাওয়া আড্ডা গল্পগুজব বন্ধুদের সাথে প্যান্ডেল প্যান্ডেলে প্রতিমা পরিদর্শন সবকিছুতেই একটা আলাদা অনুভূতি থাকে। এই পূজোর বিশেষ চারটে দিনে তারকাদেরও সারা বছরের শুটিং থেকে মুক্তি থাকে। তবে এ বছরের পূজোটা কেমন কাটবে? জনপ্রিয় অভিনেত্রী মধুমিতা সরকারের একটি সাক্ষাৎকারের নিজের পুজো সম্পর্কে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিলেন মধুমিতা।
সাক্ষাৎকারে মধুমিতা নিজের ছোটবেলার পুজো সম্পর্কে জানান “ছোটবেলায় দুর্গাপুজোর জন্য ১ মাস আগে থেকে অপেক্ষা করতাম। বালিগঞ্জে আমার বাড়ি। আমাদের রান্নাঘর থেকে দুর্গাবাড়ি দেখা যায়। প্রতিবছর ওখানে পারফর্ম করতাম। ষষ্ঠী থেকে নবমী অনুষ্ঠান থাকত। নাচ, গান, নাটক সবকিছুর সঙ্গেই যুক্ত থাকতাম আমি।” এছাড়া অভিনেত্রী বলেন “প্যান্ডেলের প্রথম বাঁশটা যখন পড়ত, পাগলের মতো ছুটতাম পাড়ার বন্ধুরা। কারণ বাঁশ-ত্রিপল পড়া মানেই আমাদের রিহার্সাল শুরু হওয়া। সেই হুল্লোড় চলত একেবারে কালীপুজো, ভাইফোঁটা অবধি। দশমীতেও আমাদের পুজোর আমেজ শেষ হত না। ভাই-দাদাদের কপালে ফোঁটা মানেই আমাদের সে কী মন খারাপ… আসছে বছর আবার হবে। আবার অপেক্ষা করতাম সরস্বতী পুজোর জন্য।”,
তবে বর্তমানে সময় অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে বর্তমানে তিনি এখন টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী। পঞ্চমী অব্দি ছবির শুটিং থাকবে বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী। এখন আর বন্ধুদের সাথে পুজোতে আড্ডা হয় না সকলেই নিজেদের কাজে সূত্রে বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। বাড়ির সকলে সঙ্গী পুজোর বেশিরভাগ সময়টা কাটবে তার অষ্টমীতে অঞ্জলি দিতে যাবেন অবশ্যই এই কথা জানিয়েছেন অভিনেত্রী। তবে ছোটবেলার পুজো ঠিক কতটা মিস করেন অভিনেত্রী এর উত্তরে তিনি জানিয়েছেন “বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিবছর নাগরদোলা চড়া, ভোগ খাওয়া, বড়দের হাতে হাতে পুজোর কাজ এগিয়ে দেওয়া, প্যান্ডেল হপিং, সকাল থেকে দূর্গাবাড়িতে দেদার আড্ডা দেওয়া.. এসব এখন মিস করি একটু। সবমিলিয়ে বছরের সেরা সময় কাটত দূর্গাপুজোতে।”
ছোটবেলায় পুজোর কটা জামা হত এর উত্তরে অভিনেত্রী জানান “প্রত্যেকবার পুজোয় ১০টা জামা চাই-ই-চাই। ১১-১২টা হলে ঠিক আছে। কিন্তু দশটার থেকে কম হলে চলবে না। ষষ্ঠা থেকে দশমী দু-বেলা নতুন পোশাক। সকালের পোশাক রাতে পরা নৈব নৈব চ! সেখান থেকে এখন এরকম অবস্থা যে আগের বছরের পুজোর জামাকাপড়ও পরে নিই। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঁধে দায়িত্ব বাড়লে মানুষের কত পরিবর্তন হয়, এখন সেটাই দেখি। পুজোর ওই ইনোসেন্সটাই এখন মিস করি।” তবে এ বছরে তার পূজোর সাতটা আনা “সারাবছর ওয়েস্টার্ন, ইন্দো-ওয়েস্টার্ন থেকে শুরু করে এত ধরণের পোশাক পরি যে, পুজোর সময়ে শাড়িটাই পরতে বেশি ভাল লাগে। সাজে সাবেকিয়ানা থাকে। পুজো মানেই আমার কাছে, ‘আবেগী পুনর্মিলন’।”
সেলিব্রেটি হওয়ার পরেও প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে করে কতটা প্রতিমা দর্শন করা হয়? “প্যান্ডেল হপিং এখনও করি। আমার একটাই কথা- মবড হওয়ার ভয় যতই থাকুক, কিন্তু মা এসেছে দেখব না?.. ভিড় থেকে বাঁচার হাজারটা উপায় বের করেছি। এখন মাস্ক আছে। দর্শকদের কাছে জনপ্রিয়তার পর পুজোয় যখন ঘুরতে যেতাম, তখন প্যান্ডেলে ঢোকার আগে আমার চারপাশে বন্ধুদের একটা দূর্গ বানিয়ে নিতাম। আমি মাঝখানে থাকতাম। কোনও বন্ধু আবার রসিকতা করার জন্যই মণ্ডপের ভিড়েই ‘এই যে পাখি-পাখি..’ করে চেঁচিয়ে ওঠত। আমার বন্ধুরা সকলে খুব হুল্লোড়বাজ। এখনও। দূর্গাপুজোয় বন্ধুদের সঙ্গে বেশিরভাগ সময় কাটালেও কালীপুজোটা পরিবারের সঙ্গে কাটাই। বাবার সঙ্গে প্রতিমা-দর্শনে যাই।”
আর পুজোর প্রেম নিয়ে অভিনেত্রী জানিয়েছেন “জীবনের প্রথম ক্রাশটাই বুঝেছি পুজোয়। তখন আমি ক্লাস সিক্সে। গুপি গাইন বাঘা বাইন নাটকের রিহার্সাল করছি। ভূত সেজেছিলাম আমি। এছাড়াও নাচ-গানের রিহার্সাল চলছে। বাড়ির সামনের স্কুলটাতেই তখন পড়ছি। কানে খবর এল, সাউথ পয়েন্টের ২-৩ জন ছেলে বেশ ঘুরঘুর করছে। আমার সম্পর্কে বেশ খোঁজখবর নিচ্ছে। পঞ্চমীর সন্ধেবেলা থেকেই সব বন্ধুরা ঠাট্টা করা শুরু করল যে, এই দেখ তোকে পছন্দ করেছে ওই ছেলেটা। সেই প্রথম বুঝতে পেরেছিলাম দুষ্টু-মিষ্টি চোখে চাহনি, ক্রাশ-প্রেম.. এগুলো আসলে কী?”