১৫ বছরেই সন্তানের জন্ম, মেয়ে দেয় মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে! ইন্দ্রাণী ও ইলার লড়াইয়ের কাহিনী হার মানাবে সিনেমাকে
মা-মেয়ের নাকি দিদি-বোন! একবার দেখে বোঝার উপায় নেই। ইলা বিশ্বাস আর ইন্দ্রানী বিশ্ব। সম্পর্কে দুজন মা আর মেয়ে। দুজনের বয়সের মধ্যে পার্থক্য মাত্র ১৫ বছর। প্রেম করে ১৩ বছর বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ইলা বিশ্বাস। কিন্তু ভালবাসার মানুষ বদলে যায় নিমেষে। মদ্যপ স্বামীর হাতে প্রতিদিন নির্যাতিত হতে হতো ইলাকে। পাশে ছিল না শ্বশুর বাড়ির লোকও।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে মা হয়েছিলেন ইলা বিশ্বাস। তখন থেকেই শুরু জীবন যুদ্ধ। দিদি নাম্বার ওয়ানের মঞ্চে এসে জীবনের সেই কাহিনী তুলে ধরলেন তিনি।
দিদি নম্বর ১-এর মঞ্চে মা-মেয়ের জুটি স্পেশাল এপিসোড নিয়ে তৈরি বিশেষ পর্ব ‘মায়ের আর্শীবাদ’। এদিন ইলা দেবী আর ইন্দ্রানী এসেছিলেন দিদি নাম্বার ওয়ানে। তিনি জানান, বিয়ের পর স্বামী ভীষণ অত্যাচার করত।নেশা-ভান করত। মা বাবা না থাকলে মেয়েকে মানুষ করতে পারতেন না বলে জানালেন তিনি।
ইলা দেবী জানান, “ওঁর (প্রাক্তন স্বামী) মা আমার মেয়ের মুখও দেখেনি। ভেবেছিলাম মেয়ে হয়েছে বলে এমন ব্য়বহার। ছেলে হলে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু ছেলে হওয়ার পরেও কিছু বদলায়নি”।
বিয়ে বাচানোর চেষ্টাও করেছিলেন বলে জানান ইলা। মায়ের কাছে মেয়েকে রেখে স্বামী আর পুত্রসন্তানকে নিয়ে কলকাতাতেও থেকেছেন। কলকাতার এক অফিসে সিকিউরিটি গার্ড এর কাজ করতো তার স্বামী। তবে সেই চাকরি চলে যায়। তার বাবাকেও প্রাক্তন স্বামীর হাতে মার খেতে হয়েছিল বলে জানান ইন্দ্রনীর মা।
দিনের পর দিন অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে অবশেষে স্বামীকে ডিভোর্স দেন ইলা। তখন থেকেই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর শুরু ইলার। কোম্পানিতে চাকরি করার সময় বর্তমান স্বামীর সঙ্গে আলাপ। দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তাব দেন ওই ব্যক্তি।
ইলা বিশ্বাস জানান,”আমি জানিয়েছিলাম আমার দুই সন্তান আছে। তাঁদের মেনে নিলে তবেই আমি বিয়ে করব”।
তৃতীয় শ্রেণীতে পড়তো ইন্দ্রানী। ওইটুকু বয়সে অন্য একটা মানুষকে বাবা বলে ডাকতে দ্বিধাবোধ করেনি সে। নতুন করে সংসার পাতেন ইলা। নিজের বাবার চেয়েও তাঁকে ও তাঁর ভাইকে বেশি ভালোবাসেন সৎ বাবা।
একথা জানান ইন্দ্রানী। বর্তমানে ইন্দ্রানী ও বিবাহিতা। দ্বিতীয় স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে মসলন্দপুরে নিজের বাপের বাড়িতেই থাকেন ইলা দেবী। দ্বিতীয় স্বামী ইলার বাবা মাকেও আগলে রেখেছেন নিজের বাবা মায়ের মতই। এই কাহিনী শুনে অবাক হয়ে যান রচনা নিজেই।