“যখন শুটিং করেছিলাম, আমার বেশ জ্বর ছিল…ভাইরাল ফিভারে কাবু হয়েও মহালয়ার সুযোগটা আমি হাতছাড়া করতে চাইনি” – চলতি বছরের মহালয়ার দেবী দশভূজা হয়ে ওঠার গল্প বললেন ঋতুপর্ণা
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন। তাঁর সম্পূর্ণ অভিনয় ক্যারিয়ারে প্রচুর বাংলা সিনেমায় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে অভিনেত্রীকে। তেমনই নিজের অভিনয় দক্ষতায় কেড়ে নিয়েছেন দর্শকের মন। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এখনো অবধি বেশ ভালই সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন অভিনেত্রী। শেষবারের মতো তাঁকে দেখা গিয়েছিল বেলা শুরু সিনেমায়। এবার বড় পর্দার পাশাপাশি নাম লিখিয়েছেন ছোট পর্দাতেও। ছোট পর্দায় কোন ধারাবাহিকের চরিত্র নয় অভিনয় করছেন মহালয়ার বিশেষ অনুষ্ঠানে। সিংহবাহিনী দশভূজার চরিত্রে দেখতে পাওয়া যাবে তাঁকে। এই খবর যদিও আমরা আগেই পেয়েছি। এবার ক্যামেরার পিছনে অভিনেত্রী শেয়ার করলেন তাঁর দশভূজা হয়ে ওঠার কিছু গল্প।
সম্প্রতি এক বিশিষ্ট সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বললেন বেশ কিছু গল্প। সংবাদ মাধ্যম এর সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, “প্রথমবার মহালয়ায় আপনি মহিষাসুরমর্দিনীরূপে অবতীর্ণ হচ্ছেন (২৫ সেপ্টেম্বর, ভোর পাঁচটা, কালার্স বাংলা চ্যানেলে) ‘দেবী দশমহাবিদ্যা’-য়। সেটা নিয়ে কতটা ভাললাগা আছে?” অভিনেত্রী একটু হেসে উত্তর দেন, “আই অ্যাম আ পারফরমার। নাচ নিয়ে আমি সবসময় এক্সাইটেড। সবসময় আমার কেরিয়ারে নাচের একটা আলাদা গুরুত্ব আছে। ছোটবেলায় নাচই প্যাশন ছিল। ফলে নাচ জড়িয়ে আছে, এমন কোনও কাজ এলে আমি খুব খুশি হয়ে যাই। টেলিভিশনে যখনই নাচ নিয়ে অনুষ্ঠান করেছি, সবগুলোতেই খুব ভাল প্রতিক্রিয়া পেয়েছি।
ইনফ্যাক্ট, কিছুদিন আগেও ‘বেলাশুরু’-র ‘টাপা টিনি’-র জন্য সকলে যা ভালবাসা দিয়েছেন কী বলব! দর্শকের বক্তব্য যে, অভিনয়ের পাশাপাশি, নাচে তাদের মন ভরে গিয়েছে। সেই জন্যই মহালয়ার অনুষ্ঠানে মা দুর্গা রূপে হাজির হওয়ার অফার আসায় আমার খুব এক্সাইটেড লেগেছিল। খুব যত্ন নিয়ে আমরা কাজটা করেছি। দুর্গার সাজটা সম্পূর্ণ করতেই তিনঘণ্টা লাগত, চোখ, চুল, মেকআপ সব মিলিয়ে। প্রায় চার-পাঁচজন মেকআপের জন্য ছিলেন। প্রচুর হার্ড ওয়ার্ক রয়েছে এর নেপথ্যে। মায়ের দশটা রূপ দেখা যাবে ‘দেবী দশমহাবিদ্যা’য়, আমি ছাড়া টেলিভিশনের অনেক প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রীও রয়েছেন। আমি লিড করলেও প্রত্যেকের সুন্দর উপস্থিতি চোখে পড়বে। মেকআপ আর কস্টিউম চমৎকার হয়েছে, ভীষণ রিয়্যাল লাগছে। আশা করব সকলের ভাল লাগবে”।
প্রথমবার অভিনয় মহালয়ায়! অভিনেত্রী কি শেয়ার করবেন অভিনেত্রী তার রিশোনা আর অঙ্কনের সাথে? অভিনেত্রী বলেন, “ইনফ্যাক্ট, শুটিংয়ের সময় ওরা দু’জনেই সেটে এসেছিল। সেই সময় ওদের ছুটি ছিল, ফলে ওদের অনেকটাই দেখা (হাসি)। যখন শুটিং করেছিলাম, আমার বেশ জ্বর ছিল। ভাইরাল ফিভারে কাবু হয়েও মহালয়ার সুযোগটা আমি হাতছাড়া করতে চাইনি। সেই সময় আবার ‘দত্তা’-র শুটিং চলছিল, নির্মলদার (চক্রবর্তী) ছবি। চাপ থাকলেও ‘দেবী দশমহাবিদ্যা’ করার জন্য মন টেনেছিল খুব। ‘দত্তা’র কথা বললেই মনে পড়ে প্রদীপদার (মুখোপাধ্যায়) কথা। ওঁর জন্মদিন আমরা সেলিব্রেট করেছিলাম সেটে। ওঁর সঙ্গে আমার তিনটে ছবি, ‘দ্য পার্সেল’, ‘ছুটি’ আর ‘দত্তা’। কত বড়মাপের অভিনেতা আর ভাল মানুষ ছিলেন, খুব মনে পড়ে”।
এই বয়সে এসে এই পরিমাণ মাল্টিটাস্কিং-এর এনার্জি কোথা থেকে পান? অভিনেত্রী কৃষি বলেন, “এটাই আমি। কোনও কাজই হেলাফেলা করে করতে পারি না। কালার্স বাংলা খুব সুন্দরভাবে পুরোটা করেছে। কনসেপ্ট ভাল লেগেছে। ডিরেক্টর শুভেন্দু চক্রবর্তীর ভাবনাটা সুন্দর। ওদের পুরো টিমটাই খুব ভাল”।