‘মিঠাই কাজ করবে আর হম্বিতম্বি দেখাবে সিড! এভাবে ধারাবাহিকের মধ্যে পুরুষতান্ত্রিকতা কে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে! ‘মিঠাই’ দেখে রীতিমতো চটে গেলেন নেটিজেনরা!
সারাদিন ঘরের কাজ করবে মেয়েরা আর পুরুষ মানুষ মাত্রই সে এসে বউয়ের ওপর চেঁচামেচি করবে এই জিনিসটা আজকাল আর মেনে নেওয়া যায়না। ঘরের যাবতীয় কাজ করবে মেয়েরা আর শুধুমাত্র বর বলেই সে বউয়ের উপর হম্বিতম্বি করবে এটা এক ধরনের পুরুষ তান্ত্রিকতা। এই পুরুষতান্ত্রিকতা বর্তমান যুগে আর মেনে নেওয়া যায় না, এখন নারী স্বাধীনতার যুগ, নারী মানেই তাকে বাড়ির কাজ করতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা আজ আর নেই। বর্তমান যুগে নারী-পুরুষ দুজনেই সমান তাই অনেক বাড়িতেই দেখা যায় যে বাড়ির কাজে হাত লাগাচ্ছেন পুরুষ মানুষও। স্ত্রীর সারাদিনের পরিশ্রম কিছুটা হলেও ভাগ করে নিচ্ছেন তিনি। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে মিঠাই সিরিয়ালটি প্রবল সমালোচিত হচ্ছে নেটিজেনদের কাছে।
সারাদিন ধরে মিঠাইয়ের উপর হম্বিতম্বি করছে সিড এটা মেনে নিতে পারছেন না দর্শকরা। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে মিঠাই। ঘরে বাইরে সমান হাতে সামলাচ্ছে সে সবদিক কিন্তু শুধুমাত্র স্বামী বলে কারনে অকারণে সিড মিঠাইয়ের উপর চোটপাট করবে এটা মেনে নিতে পারছেন না মিঠাইয়ের ভক্তরা। তারা মনে করছেন এর মধ্য দিয়ে পুরুষতান্ত্রিকতাকে উসকে দিচ্ছে জি বাংলার জনপ্রিয় এই ধারাবাহিক। সম্প্রতি ধারাবাহিকে দেখা গেছে সিদ্ধার্থ অফিস থেকে ফিরে এসে পিঙ্কির সামনে মিঠাইয়ের উপর অসভ্যের মত চিৎকার করছে! বলা যেতে পারে নিজের স্বামীত্ব, নিজের পৌরুষ দেখিয়েছে সে; এরপরই চটেছেন মিঠাই ধারাবাহিকের মহিলা ভক্তরা!
বউকে মন চাইলেই দু-চার কথা বলা যায় তাই না? অন্যদিকে বউ স্বামীর ওপর চোটপাট দেখালেই হয়ে যাবে অসভ্যতা, অভদ্রতা, ছোটলোকপনা? কেন গলা কি পুরুষদের একচেটিয়া অধিকার যে শুধুমাত্র তারাই মেয়েদের ওপর গলা তুলতে পারে? এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন মিঠাই ধারাবাহিকের ভক্তরা। ধারাবাহিকের এপিসোড দেখে একজন মহিলা ভক্ত অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে লিখেছেন,“সিড মিঠাইকে বকলো বলে কেউ কি সিডের উপর একটু একটু রাগ করেছেন? ধুর! একদম রাগ করবেন না। একটু বুঝুন, সিডকে অফিস সামলাতে হয়। ওর তো মাথা গরম হতেই পারে। আর বউ রা তো সম্পত্তি, রাগ হলে তার ওপর ছাড়া আর কার ওপর ঝাড়বে???”
আর মিঠাই তো সারাদিন বাড়িতে আয়েশ করে। ওর আবার কি কাজ? ওই তো সবাইকে সময়মত খাবার দেওয়া রান্না করা এইসব! এগুলো করতে আবার খাটনি হয় নাকি? নাকি এগুলো করতে গিয়ে কারো মেজাজ গরম হয়? আর ওই তো দু-একবার মিষ্টিতে পাক দিতে হয়! তাই সারাদিন বাড়িতে নেচে গেয়ে বেড়িয়ে বরের এইটুকু অপমান তো সহ্য করতেই হবে। যতই হোক দিন শেষে তো একটা ‘ময়রা’ই।”
এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত করেছেন অধিকাংশ মানুষ। তারা লিখেছেন সত্যিই মিঠাই সারাদিন বাড়িতে কত কাজ করে।নিপা তো সারাদিন রুদ্রদা রুদ্রদা করে বেড়ায়, কাজের মধ্যেই আসেনা। ছোট কাকিমা সেভাবে কোন কাজ করেন না। ঠাম্মি না হয় বয়সের কারণে কাজ করতে পারেন না। কিন্তু শ্রী আর নন্দাও বাপের বাড়িতে এসে কাজ করে না, তারপর হল্লা পার্টি সারাদিন উৎপাত করে। একমাত্র পিপি যা একটু এসে কাজ করে। এখন এই বিষয়গুলো একটু বদলানো দরকার। একজন মানুষ মিলে সারাদিন বাড়ির কাজ করে যাবে আর সেই আবার বরের হম্বিতম্বি সহ্য করবে এমনটা তো চলতে পারে না!- ধারাবাহিকের মধ্যে এভাবে পুরুষতান্ত্রিকতাকে প্রশ্রয় দিলে ভক্তরা সহ্য করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তারা।