বাংলা সিরিয়াল

‘কাজ দরকার বলে ক্যামেরার সামনে চুমু খেতে পারব না ছোট পোশাক পরবো না’, সাফ কথা শ্বেতা ভট্টাচার্যের, অথচ তিনি বড় পর্দায় পা রাখলেন দেবের বিপরীতে

ছোট পর্দা-বড় পর্দা সব মিলিয়ে বেজায় ব্যস্ত শ্বেতা ভট্টাচার্য(Sweta Bhattacharya)। তবে দুই জায়গাতেই তার অভিনয় সমান প্রশংসিত। বর্তমানে জি বাংলার(Zee Bangla) সোহাগ জল(Sohag Jol) ধারাবাহিকে দেখা যাচ্ছে জুই চরিত্রে। একই সঙ্গে টলিউডের (Tollywood)অন্যতম সফল ছবি প্রজাপতি (Projapoti)ছবির মধ্যে দিয়ে বড় পর্দায় পা রেখেছেন তিনি।

স্বাভাবিকভাবে বলা যেতেই পারে তিনি এখন ক্লাউড সিক্সটি নাইনে। আর হবে নাই বা কেন কোনরকম অসৎ পথ না নিয়েই নিজের শর্তে ঠিক থেকে এতটা উন্নতির স্বাদ পেয়ে গিয়েছেন অল্প সময়তেই। স্বাভাবিকভাবেই শ্বেতা খুশি।

সম্প্রতি এই নিয়ে মুখোমুখি হয়েছিলেন আনন্দবাজার অনলাইনের। সেখানে নিজের জানা-অজানা মনের কথা ভাগ করে নিলেন সকলের সঙ্গে। প্রথমে যখন প্রজাপতি নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হয় তিনি জানান,’ দারুণ ভাবে উড়ছে। প্রথম ছবি খুব ভালো লাগছে। অভিজিৎদা অতনুদাদের অনেক ধন্যবাদ। সিরিয়ালের চাপের জন্য অনেক কিছুতে উপস্থিত থাকতে পারিনি। সেগুলোও মেনে নিয়েছেন। এটাই বড় প্রাপ্তি আমি কৃতজ্ঞ।

তবে সিরিয়ালের অভিনেতাদের বড় পর্দায় কাজ পাওয়ার সুযোগ কঠিন নয় সেটা কি তবে এবার ভাঙলো? শ্বেতা জানিয়েছেন,’ আমি বিশ্বাস করি প্রতিভায়। সেটা থাকলে নিশ্চয়ই সুযোগ আসে। আমি তো পেলাম।

দশ বছরের বেশি সময় ধরে সিরিয়ালে অভিনয় করছেন তিনি। কখনো কি ছোট পর্দা থেকে বিরতি নিতে ইচ্ছে হয়? কি উত্তর দিলেন পর্দার জুই? এ ব্যাপারে অবশ্য শ্বেতা অকপট। জানালেন তার ভালো থাকার ওষুধ হলো কাজ। বরং কাজ না থাকলে তিনি অবসাদে ভোগেন। কিন্তু এমন নয় যে ছুটি চান না তিনি। কোন ধারাবাহিক শুরুর আগে কয়েকটি শর্ত দিয়ে দেন পরিচালকের কাছে। সেগুলি হল রবিবার ছুটি, জানুয়ারি মাসের প্রথম দিন ছুটি, কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার হলে আগে ছাড়তে হবে ইত্যাদি। বুঝিয়ে দিলেন কাজের খিদে তার মারাত্মক।

মাচা শো থেকে প্রচুর রোজগার হয় আবার দর্শকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা যায় এক্ষেত্রে কোনটাকে বেশি গুরুত্ব দেবেন শ্বেতা? অভিনেত্রীর কথায়,’ বেশি রোজগার হবে বলে। সত্যি বলতে আমি মাচা করতে একদম ভালোবাসি না। আসলে আমার মাথার ওপরে অনেক দায়িত্ব আছে। তাই সব সময় ভাবতে হয়। এই টাকাটা পেলে আমি এইটা করতে পারব। তাই মাচা করি’।

তবে কি সিনেমার নায়িকাদের মত অতটা ঝা চকচকে জীবন নয় অভিনেত্রীর? স্বীকার করে নিলেন শ্বেতা। জানিয়েছেন,’ একদমই নয়। মা-বাবা দুজনেই অসুস্থ। মায়ের তো দুবার স্ট্রোক হয়ে গিয়েছে। ডান চোখে দেখতে পান না। মা রোজ আমার সঙ্গে শুটিংয়ে আসে একটাই কারণে। ডাক্তার বলেছেন এবার স্ট্রোক হলে আর বাঁচানো যাবে না। তাই মা সব সময় আমার সঙ্গে থাকে। তাই আমার কাজটা শখের নয়। প্রয়োজনের। সঙ্গে ভালোবাসা তো আছেই’।

তবে ছেলে ভালো থেকে যে বেশ কষ্ট করেই বড় হতে হয়েছে তাকে তা তার কথা স্পষ্ট। স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে শ্বেতা বলেছেন,’ ছোটবেলা তো আরো কঠিন ছিল। মোটে সহজ ছিল না। নুন ভাত খেয়ে কাটিয়েছি। আমার দাদা ছিলেন সেও মারা গিয়েছে। আমার ছোটবেলা বলতে বসলে ইতিহাস হয়ে যাবে। মা বাইরে বেরোনোর আগে শিখিয়ে দিতেন কেউ জিজ্ঞেস করলে যেন বলি মাছ ভাত মা মাংস ভাত খেয়েছে। দুপুরে খেয়ে রাতে ভাবতে হত কি খাব। এখন তাই একটাই লক্ষ্য। আমার বাবা মা যেন ভালো থাকেন’।

রোজগার যখন বাধ্যতামূলক হয়ে যায় তখন মানুষ অনেক সময় প্রলোভনে পা দিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেন। সেটা অবশ্য করেননি শ্বেতা। জানিয়েছেন,’ আমি এত মরিয়া হয়ে যায়নি কখনো কাজের জন্য যে যাই বলবে করব’। বিশেষ করে জানিয়ে দিয়েছেন সুটিং সিনেমার জন্য কখনোই ছোট পোশাক বা খোলামেলা পোশাক তিনি পড়বেন না। চুমু খাবেন না ক্যামেরার সামনে। তবে শেষ প্রশ্নই বেশ লজ্জা পেয়েছেন অভিনেত্রী। যখনই প্রশ্ন আসে রুবেলের সঙ্গে বিয়ে নিয়ে, জানিয়েছেন দুজনের পরিবার দুজনকে ভীষণ ভালোবাসে। তারাই আসলে ঘটকালীটা করেছে।

Back to top button

Ad Blocker Detected!

Refresh