৯০ এর দশকের জনপ্রিয় একগুচ্ছ অভিনেতাদের মধ্যে একজন ছিলেন জনি লিভার। শুধু বলিউড নয় দেশের তাবোড় তাবোড় হাস্যকৌতুক শিল্পীদের নামের তালিকায় জনি লিভারের নাম থাকতো। জানা যায় পরিচালকেরা নাকি নিজের সিনেমার জন্য জনি কে ‘লাকি চার্ম’ বলতেন। সেই সময় কোনো ছবিতে জনি লিভার থাকা মানে ছবি হিট। কিন্তু ৯০ এর দশকে এক বছরের প্রায় প্রত্যেকটি ছবিতেই দেখতে পাওয়া যেত যে অভিনেতাকে তাঁকে এখন আর কোনো সিনেমাতেই তেমন একটা দেখতে পাওয়া যায় না।
প্রসঙ্গত ‘তুম পর হাম কুরবান’ সিনেমার হাত ধরে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন জনি। এই প্রথম সিনেমাতেই দুর্দান্ত জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন অভিনেতা। এর পরেই পরিচালক সুনীল দত্তের নজরে পড়ার পর তাঁকে আর পিছন ঘুরে তাকাতে হয়নি। ‘দর্দ কা রিশ্তা’ সিনেমা বিপুল জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিল অভিনেতাকে।
তবে জানা যায় বলিউডে পা রাখার আগেও কমেডি সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অভিনেতা। মিমিক্রি আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন। স্ট্যান্ড আপ কমিডির দরজা খুলে গিয়েছিল তাঁর সামনে। বলিউডের এই নামী অভিনেতার দুই সন্তান জেমি ও জেসি। তাঁরাও বাবার পথই অনুসরণ করেছেন। দু’জনেই কমেডিয়ান হয়ে উঠেছেন। জনি-কন্যা জেমি মিমিক্রি আর্টিস্ট হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তাও পেয়েছেন।
সম্প্রতি রোহিত শেট্টি পরিচালিত সিনেমা ‘সার্কাস’ – এ দেখা মেলে বর্ষিয়ান অভিনেতা জনির। বেশ দীর্ঘ সময়ের বিরতির পর অভিনেতাকে পর্দায় দেখে উচ্ছসিত হয়েছেন দর্শকমহল। জনির ম্যাজিক কাজ করেছে। এতটা বয়স বাড়ার পরেও নিজের দক্ষতা কতটা তাঁর প্রমাণ দিলেন অভিনেতা। কিন্তু তারপরেও বলিউড তাঁকে যোগ্য সম্মান দেয়নি। এমন অবস্থায় যে কোনো শিল্পীর মনেই ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে হতাশা জন্মানো খুবই স্বাভাবিক।
এক সাক্ষাৎকারে নিজের একরাশ হতাশা প্রকাশ করেছেন অভিনেতা। এক বিশিষ্ট সংবাদ মাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকারের সময় তিনি বলেন, ‘সেই সময় নির্দেশকরা আমায় বিশ্বাস করতেন। অনেক দৃশ্যে আমি নিজের মতো করেও অভিনয় করেছি। কমেডি দৃশ্যগুলিকে আরও ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলত সেগুলি’।
অভিনেতার সংযোজন, ‘অনেক সময় নায়করা ভয় পেত। সেই জন্য আমার দৃশ্য কাঁচি চালানো হতো। আমার অভিনীত দৃশ্য দেখে নায়করা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগত। এমনকি লেখকদের কাছে গিয়ে বলত তাঁদেরও যেন কমেডি দৃশ্য দেওয়া হয়। এরপর থেকেই কমেডির দৃশ্যগুলি ভাগ করে দেওয়া শুরু হল। আস্তে আস্তে আমার দৃশ্যগুলি ছোট হতে শুরু করল। এখন তো ছবিতে কমেডিই নেই’।