‘ছেলে পুজোয় ওর বাবার কাছে যেতে চায় না’, এবারে নিজের বাড়িতেই দুর্গাপূজা করার সিদ্ধান্ত নিলেন অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলীর দিদি দেবশ্রী গাঙ্গুলী
সামনেই পুজো, দেখতে দেখতে বাঙালি আরো একটি বছর দুর্গা পুজো মেতে উঠতে চলেছে। তবে এবারের দুর্গা পূজো গাঙ্গুলী পরিবারের কাছে কিছুটা আলাদা এবারে রাজ এবং শুভশ্রীর পুত্র ইউভান এর্ প্রথম দুর্গাপূজা। ফলে উপরি আনন্দ তো রয়েছে। সম্প্রতি কয়েকদিন আগেই ইউভান এক বছর পূর্ণ করেছে, ছোট ছোট পায়ে দেখতে দেখতে একটা বছর কাটিয়ে ফেলো এই খুদে তারকা। তাকে নিয়ে এবার পুজো কাটবে রাজ এবং শুভশ্রীর পরিবারের।
পুজোর আগে ইউভানর মাসি অর্থাৎ শুভশ্রী গাঙ্গুলীর বড় বোন দেবশ্রী গাঙ্গুলীকে এক সাক্ষাতকারের মাধ্যমে পাওয়া গেল। সেই সাক্ষাৎকারে তার সঙ্গে পুজো সংক্রান্ত আলোচনা হয়। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন এবারের তার পুজো কাটবে তার দুই ছেলেকে নিয়ে তার বড় ছেলে অনীশ যার বয়স ১৮ এবং ছোট ছেলে ইউভান মানে নিজের বোনের ছেলে ইউভান কেও দেবশ্রীর গাঙ্গুলী নিজের ছেলের মতোই ভালোবাসেন। আর সঙ্গে বোন শুভশ্রী এবং রাজ চক্রবর্তী তো থাকবেই।
দেবশ্রী জানান গত বছর থেকেই নিজের বাড়িতে দুর্গাপূজা শুরু করেন দেবশ্রী। প্রতিবছরই ঘুরে ঘুরে দূর থেকে মা কে দেখতেন, মাকে আপন করে কখনো পাননি। তাই গত বছরই ঠিক করেছেন নিজের বাড়ির দুর্গাপুজো করবেন তিনি তারপর থেকে মাকে সামনে থেকে দেখতে পেয়েছেন তিনি। নিজের বাড়ির দুর্গাপূজায় একটা অন্যরকম আনন্দ রয়েছে। সকলকে একজোট করা যায়, পরিবারের সকলেই এক জায়গায় হয়। এতে অনেক আনন্দ রয়েছে। বাবা-মা ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজন সকলকে এক সঙ্গে নিয়ে হুল্লোড় করা যায়।
এই দুর্গা পুজোর বিশেষ আকর্ষণ হলো তাদের মায়ের হাতের ভোগ। এক মা ভোগ রাধে অন্য মা সেই ভোগ গ্রহণ করছেন। দেবশ্রী রায়ের নিজের ক্লাউড কিচেন রয়েছে সেখান থেকেই পুজোর বাকি দিনের সমস্ত খাবারের আয়োজন করা হবে।
বাড়ির পুজোতে অনেকটা দায়িত্ব নেয় দেবশ্রী রায়ের বড় ছেলে অনীশ। সিঙ্গেল মাদার হওয়ায় একাই ছেলেকে মানুষ করেছেন তিনি। আমাদের সমাজে দাঁড়িয়ে যেখানে পিতৃ পরিচয় ছাড়া একজন সন্তানকে মানুষ করা অসম্ভব সেখানে দাঁড়িয়ে দেবশ্রী রায় একাই নিজের ছেলেকে মানুষ করেছেন, বড় করে তুলেছেন। ভালবেসে ছেলেকে ঋষি বলে ডাকেন দেবশ্রী। সামনেই ১৮ তে পা দেবে দেবশ্রী পুত্র। দুর্গাপূজায় নিজের হাতে পুরো বাড়ি সাজায় ঋষি, জানিয়েছেন দেবশ্রী।
ঋষি অনেক ছোট থাকতে দেবশ্রী এবং তার প্রাক্তন স্বামী অতীনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তার প্রাক্তন স্বামীর বাড়ি দুর্গাপূজা হয়। ছোটবেলায় বাবাকে খুব মিস করতো, বারবার বাবার কাছে ছুটে যেত। দেবশ্রী মনে করতেন তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে তবে ছেলের সঙ্গে নয়। কিন্তু পরবর্তীকালে অতীন বাবুর নতুন বিয়ে হয়েছে, নতুন পরিবার হয়েছে তাই ঋষি এখন আর সেখানে যেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। যার ফলে দেবশ্রী রায় নিজের বাড়িতে দুর্গাপূজা করার সিদ্ধান্ত নেন।
দেবশ্রী গাঙ্গুলী জানিয়েছেন তার ছেলে ঋষি ভীষণ আধ্যাত্বিক। ইসকন এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে সে পুজো পাঠের ব্যাপারে পরিবারের সকলের থেকেই বেশি জানে ঋষি। এই প্রসঙ্গে দেবশ্রী একটি মজার ঘটনা দর্শকের সঙ্গে ভাগ করেছেন। তিনি বলেন ‘গত বছর পুজোর সময়ে পুরোহিতের সঙ্গে একজন সাহায্য করার লোক এসেছিলেন, তার মন্ত্র উচ্চারণ ভুল ধরে ছিল ঋষি এবং তখনই ঋষি আমাকে জানিয়েছিল নয় তুমি অন্য কাউকে আনো নয় তুমি ওর জায়গায় আমাকে বসতে দাও তখনই ঋষির ভক্তি এবং নিষ্ঠা দেখে অবাক হয়েছিলাম।’
এবারেও নিজের মনের মত সেজে উঠবেন দেবশ্রী গাঙ্গুলী। সাজতে তিনি বরাবরই ভালোবাসেন। পুজোর পাঁচটা দিন আত্মীয়-স্বজন পরিবারের লোকজন সকলের সঙ্গে কাটাবেন। আশেপাশের ঠাকুর দেখতে বেরোবে রাতের দিকে এমনটাই জানিয়েছেন। তিনি এবছর নিজের ওজন কমানোর দিকে নজর দিচ্ছেন। তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছি নিজের বোন শুভশ্রী গাঙ্গুলী থেকে। সন্তান জন্ম নেওয়ার পর থেকে শুভশ্রীর শরীরে অতিরিক্ত মেদ জায়গা করে নিয়েছে। যার ফলে অভিনেত্রীকে বিভিন্নভাবে ট্রোল হতে হয়েছে। তারপরই অভিনেত্রী মাত্র ছয় মাসে নিজের ওজন কমিয়েছেন সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে দেবশ্রী রায় ও নিজের ওজন কমানোর দিকে নজর দিচ্ছেন।