জীবনটাকে শাহরুখ খানের সিনেমার মতো ভেবেছিলাম, প্রাক্তন স্বামী সুন্দরীদের সামনে মোটা বলেছে! অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে কি কি শিক্ষা নিলেন দেবশ্রী?
টলিউডের(Tollywood) তার পরিচয়- শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ে(Subhashree Ganguly)র দিদি দেবশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়(Debashree Ganguly)। আদ্যপ্রান্ত কর্পোরেট চাকুরিরতা হলেও বর্তমানে নতুন করে জীবনকে চিনতে শিখছেন তিনি। নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় প্রযোজিত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যেতে চলেছে তাকে। তবে মনের মত সুপারস্টার নন তিনি। কিন্তু তার জীবনটা কোন সিনেমার থেকে কম নয়।
বর্ধমানের মধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়ে বিয়ে হয়ে যায় কম বয়সে। অল্প বয়সেই বিচ্ছেদ সন্তান সবকিছু নিয়েই খোলামেলা আড্ডায় নিজেকে ধরা দিলেন দেবশ্রী। বাংলার প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যমের মেলে ধরলে নিজেকে। অন্যান্যদের থেকে একটু দেরিতে নিজের ইনিংস শুরু করেছেন তিনি। যদিও কখনো অভিনেত্রী হবেন সেটা ভাবেননি। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর আত্মবিশ্বাস ছিল না। তবে রাজর্ষিদের পরিচালনায় প্রথম অভিনয় সেই থেকেই আসতে থাকে আত্মবিশ্বাস।
জানিয়েছেন নিজের চেহারার জন্যই আত্মবিশ্বাস পেতেন না ক্যামেরার সামনে আসতে। তবে বর্তমানে অনেকটা বদলে গিয়েছেন তিনি। তিনি ফেক নন মোটা শারীরিক সমস্যা নেই। কিন্তু এই আত্মবিশ্বাস হারিয়ে গিয়েছিল যখন তার প্রাক্তন স্বামী সুন্দরী মহিলাদের সামনে তাকে মোটা বলে টোন কাটতেন। তখন থেকেই সচেতন হয়েছিলে নিজেকে নিয়ে।
কিন্তু ব্যক্তিগত সম্পর্ক গুলো কি প্রভাব ফেলেছে চেহারার ওপর! সরাসরি বললেন ,’হ্যাঁ ফেলেছে।আমার প্রাক্তন স্বামী এক বার বলেছিল, “তোমার মা যে সব সময় সুন্দরী সুন্দরী করেন। নিজের চেহারা কখনও আয়নায় দেখেছ? আসল সুন্দরী কাদের বলে আমার সঙ্গে বেরিয়ে দেখবে।” আমি তো তখন ছোট ছিলাম। জীবনটা শাহরুখ খানের সিনেমার মতো ছিল। সব যেন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। বিয়ের সময় অবশ্য আমি খুব রোগা ছিলাম। ছেলে হওয়ার পর আমার ওজন বেড়ে যায়। তার পর নানা কথা শুনতে হত। অবসাদ চলে আসে। তখনও খাওয়াও বেড়ে গিয়েছিল। আমি ডিপ্রেশনেই বেশি খাই’।
মাত্র ২৪ বছর বয়সে বিচ্ছেদ। ততদিনে কোলে সন্তান এসে গেছে। তবে বিচ্ছেদকে ভুলে চাকরিতে যুক্ত হন তিনি। পাশাপাশি বাবার ছোট ব্যবসা সামলাচ্ছেন। তবে এই ভয়ানক পরিস্থিতিতে বোনসহ গোটা পরিবার তার পাশে ছিল। তার পরেও স্বামী যোগাযোগ রেখেছিলেন স্বামী। কিন্তু তিনি থাকতে চাননি। স্বামী থাকার পরেও অন্য কারোর কথা ভাবার ইচ্ছে হয় তখন সেই সম্পর্কে না থাকাই ভালো। পরকীয়াকে মোটেও সমর্থন করেন না তিনি।
তবে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেও সেটা সুখের হয়নি। অভিনেত্রীর কথা অনুযায়ী,’মেয়েরা একা থাকা মানেই ছেলেরা ভেবে নেয়, হয় সেই মেয়ের শারীরিক চাহিদা আছে কিংবা আর্থিক প্রয়োজন আছে। সেই ফাঁক দিয়ে ওরা ঢোকার চেষ্টা করে। কিন্তু ছেলেরা বোঝে না যে মেয়েরা খুব স্মার্ট। অরগ্যাজ়মের জন্য আমাদের কোনও পুরুষের দরকার নেই। চাহিদা মেটানোর আরও অনেক উপায় আছে’।
তবে টলিউডের শুভশ্রী অনেক বেশি সফল। তার পরেও বোনের প্রতি এতটুকু হিংসা হয় না দেবশ্রীর। কারণ তার বোন তার ছোট মেয়ের মত। পাশাপাশি রাজের মতন ভালো মানুষ সত্যি এই দুনিয়াতে কম রয়েছে। জানালেন নিজের মুখেই। তবে অভিনয় জগতের সঙ্গে ততটা যুক্ত না থাকলেও তাকে নিয়ে কম সমালোচনায় মুখর হয় না নেটিজেন। অধিকাংশের প্রশ্ন কিভাবে কিছু না করেও এত বিলাসবহুল জীবন কাটান তিনি! সরাসরি উত্তর তিনি কাজ করেন বাবার ছোট ব্যবসা দেখেন আর টলিউডের বর্তমানে টুকটাক কাজ করছেন।
দুবার ঠকে গিয়েও ভালবাসার প্রতি বিশ্বাস ওঠেনি এখনও। তাই ভরসাযোগ্য মানুষ বলে আবার হাত ধরবেন তার ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন তিনি। শেষ করলেন নিজের আসন্ন ছবির সংলাপ দিয়ে,’ একা থাকো আর সম্পর্কে থাকো, ফাটাফাটি থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ’।