‘বনি সেনগুপ্তের মতো ছোট্ট একটা বাচ্চা ছেলেও, সবেমাত্র অভিনয়ে এসেছে…টলিউডের ৯৯ শতাংশ প্রডিউসর, ডিরেক্টর অভিনেতারা কোনও না কোনওভাবে পরোক্ষ কিংবা প্রত্যক্ষভাবে চোরেদের সরকারের সঙ্গে যুক্ত’ – টলিউডের কাদের দুর্নীতির দিকে ইঙ্গিত করলেন হিরন?
বর্তমানে বঙ্গ রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে শাসকদলের বিভিন্ন দুর্নীতি কাণ্ডের জেরে। এই দুর্নীতি কাণ্ডে আবার যুক্ত হয়েছে গ্ল্যামার। নিয়োগ দুর্নীতি কান্ডে নাম জড়িয়েছে টলিউডের অভিনেতা বনি সেনগুপ্তের। এবার সেই বিষয়ে মুখ খুললেন টলিউডের আরো একজন প্রিয় অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা হিরণ। দেব থেকে সায়নী কাউকেই তুলোধোনা করতে বাকি রাখলেন না তিনি।
শুধু তাই নয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে উঠে এসেছে আরো বেশ কয়েকজন অভিনেতা অভিনেত্রীর নাম। এসবের মধ্যেই আবার শব্দবাণ ছুড়লেন খড়্গপুরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চক্রবর্তী। অভিনেতা হিসেবে গ্রামার জগতে এন্ট্রি নিলেও এখন তিনি রাজনীতির অংশ। মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণায় একটি দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন হিরণ। সেখানেই তাঁকে বর্তমান রাজনীতিতে গ্লামারের যোগাযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তখনই উত্তর দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড নিয়ে আগেও আমি ঘাটালে বলেছিলাম। আপনাদের এখানকার সাংসদ দীপক অধিকারী, তিনিও দুর্নীতিতে ভীষণভাবে যুক্ত। তিনি ৫ কোটি টাকা এনামুল হকের কাছ থেকে নিয়েছিলেন। তখন দেবের ফ্যানরা আমার ওপর রাগ করেছিলেন। বনি সেনগুপ্তের মতো ছোট্ট একটা বাচ্চা ছেলেও, সবেমাত্র অভিনয়ে এসেছে, সেও কীভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে’।
তাঁর আরো সংযোজন, ‘তৃণমূলের যাঁরা যাঁরা রয়েছেন, সায়নী ঘোষ, তাঁর সম্পর্কে তো বিচারপতিও বলছেন। তিনি কীভাবে একটার পর একটা ফ্ল্যাট বানিয়েছেন। কার টাকায় বানিয়েছেন। শ্রীকান্ত মেহতা, যিনি সব থেকে বড় প্রডিউসার, তিনি কত বড় দুর্নীতিতে জড়িয়েছিলেন, কোটি কোটি টাকা লুঠ করেছেন, চুরি করেছেন, জেলও খেটেছেন ২ বছরের ওপর। টলিউডের ৯৯ শতাংশ প্রডিউসর, ডিরেক্টর অভিনেতারা কোনও না কোনওভাবে পরোক্ষ কিংবা প্রত্যক্ষভাবে চোরেদের সরকারের সঙ্গে যুক্ত’।
প্রসঙ্গত এর আগেও বহুবার দেবকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেছিলেন হিরন। সম্প্রতি গুরু পাচার কাণ্ডে সিবিআই এবং ইডির জেরার মুখে পড়তে হয় সংসদ অভিনেতা দেবকে। জনপ্রিয় সিনেমা ‘প্রজাপতি’ মুক্তির আগে এই প্রসঙ্গ টেনে হিরণ বলেন, ‘মাননীয় সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব এনামুল হকের থেকে টাকা নিয়েছেন। সেই টাকা দিয়ে ছবিও বানিয়েছেন। সেই কেসে যদি দোষী সাব্যস্ত হন, যদি তাঁকে জেলে হয়, তাহলে আমার সবথেকে দুশ্চিন্তা থাকবে মিঠুন দা’কে নিয়ে’।
যদিও এর উত্তরও দিয়েছিলেন দেব। তিনি বলেছিলেন, ‘হিরণ আমার ভালো বন্ধু, ওকে কিছু বলার নেই। রাজনীতির দিক থেকে আবেগপ্রবণ হয়ে হয়তো বলে ফেলেছে’। এছাড়াও যুব তৃণমূল সভানেত্রী সায়নীর প্রসঙ্গে ও বেশ কিছু মন্তব্য করেছিলেন হিরন। তাঁর জবাবও দিয়েছেন তিনি।
উত্তরে যুব তৃণমূল সভা নেত্রী সেদিন বলেছিলেন, ‘হিরণ আমার সম্পর্কে যা বলছেন, তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে হলে নেব। হিরণ রাজনীতি ও অভিনয়ে সব ক্ষেত্রেই অপ্রাসঙ্গিক একজন ব্যক্তি। যদি দল কিংবা মানুষের অ্যাটেনশন পাওয়ার জন্য এসব বলে থাকেন, তাহলে আমার কিছু বলার নেই। এটা থেকে হিরণ শেষমেশ কিছু পাবেন না’।
তিনি আরো বলেন, ‘খবরের শিরোনামে থাকতেই এসব হয়তো বলছেন। আমার ধারণা হিরণের একটা ক্ষোভ রয়েছে। হিরো হিরণ যথার্থ মর্যাদা পাননি। সেই হতাশা থেকেই এই ধরনের কথাবার্তা বলছেন’। আবার তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘হিরণ অনেক মনকষ্টে আছে। বহুবার তৃণমূলে আসতে চেয়েছেন। নেয়নি দল। যে শর্ত দিয়েছিল, সেই শর্ত আমাদের দল মানেনি। মনের দুঃখে এই কথা বলছে’।