“স্বামী সুবান এর হাত ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে উঠে এসে এখন সাফল্য পেয়ে সুবানকে দূরে ঠেলে সরিয়ে দিল” – তিয়াসা আর সুবানের ডিভোর্স প্রসঙ্গে জোরদার সমালোচনার বিরুদ্ধে মুখ খুললেন তিয়াসা
তিয়াসা লেপচা, বর্তমানে বাংলা ধারাবাহিক জগতের অন্যতম জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রী। গোবরডাঙ্গা থেকে উঠে এসে এখন বাংলা ধারাবাহিক জগতের অন্যতম সুপারস্টার হয়ে উঠেছেন তিয়াসা। একটা ধারাবাহিক বদলে দিয়েছে তিয়াসার জীবন। জি বাংলায় সম্প্রচারিত হয় তাঁর অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক “কৃষ্ণকলি”। এই ধারাবাহিকের হাত ধরেই সাফল্যের চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছানো অভিনেত্রী। তবে কর্মজীবনে সাফল্য থাকলে কি হবে ব্যক্তিগত জীবনে রয়েছে বেশ কিছু চর্চার বিষয়। অভিনেতা সুবান রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয় তিয়াসার। তারপরেই শ্যামা রূপে টেলিভিশনের পর্দায় প্রথমবার আসেন অভিনেত্রী। অভিনেতা স্বামী সুবান এর হাত থেকেই লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন এর বর্ণপরিচয় শিখেছেন তিয়াসা। তবে মার্চ মাসের গোড়ার দিকে তাঁদের ডিভোর্স জল্পনা তুলেছে তুঙ্গে। টেলিভিশন জগতে সাফল্য পেয়েই কি স্বামীকে দূরে ঠেলে সরিয়ে দিলেন অভিনেত্রী? টেলিভিশন জগতের সাফল্যই কি বদলে দিলো তিয়াসাকে? সেই সব প্রশ্নের জবাব দিলেন অভিনেত্রী নিজেই।
এক সংবাদ মাধ্যমের সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন তিনি অকপটে স্বীকার করতে পারেন সুবান তাঁর অভিনয় জগতের প্রথম গুরু। সেই কারণে তিনি তাঁর প্রাক্তন স্বামী সুবান রায়ের কাছে কৃতজ্ঞ। অভিনেত্রী আরো বলেন যে তাঁদের কিছু বন্ধু-বান্ধব, নেটিজেনরা বলেন যে তিয়াসা নাকি টেলিভিশন জগতে সাফল্য পাওয়ার পর সুবানকে ছেড়ে দিয়েছে। এদিকে সুবানের হাত ধরেই পা রেখেছে টেলিভিশন জগতে। এসব সমালোচনার জবাবে অভিনেত্রী জানান, “হ্যাঁ আমার স্বীকার করতে কোনও দ্বিধা নেই, আমি আমার হ্যাজবেন্ডের হাত ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছি। আমাকে অ্যাকশন-কাট সবকিছু হাতে ধরে ও শিখিয়েছে”।
সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এই নিয়ে বেশ ভালো রকম সমালোচনা করা হয় অভিনেত্রীকে। সেইসব নীতি পুলিশদের উদ্দেশ্যে অভিনেত্রী মন্তব্য করেন, “আমি কাউকে ছেড়ে দিয়েছি, এই লাইনটা নিয়ে আমার সমস্যা আছে। ডিভোর্স দুটো মানুষের সম্মতিতে হয়।….. মানুষের মানসিকতাটা আজও ২জি জমানায় পড়ে আছে। আজও ডিভোর্সের জন্য মেয়েদেরকেই দায়ী করা হয়। সমস্যা সবার হতে পারে, সবকিছুতে মেয়েদের দায়ী করা উচিত নয়। মেয়েদের উর্ধ্বে, প্রত্যেক মানুষের জীবনে নিজেদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে”।
অভিনেত্রী আরো জানান এইসব অভিযোগ তাঁর নামে আসতে আসতে একটা সময় অভিনেত্রী এতটাই মানসিক দিক থেকে ভেঙে গিয়েছিলেন যে তিনি ভাবতেন তিনি নিজেকে হয়তো শেষ করে দেবেন। তিয়াসার কথায়, “মাঝে মাঝে আমার এবার মরেই যাব। কেন আমি এত সহ্য করব? আমি অনেক কাঁদতাম, খেতাম না। পরে ভাবলাম যারা আমাকে বিচার করছে, তারা আমার কোনও কাজে আসবে। সকলকে বলব এইসব লোকেদের কথা শুনে নিজের মনোবল হারাবেন না। সবথেকে জরুরি হল নিজেকে ভালো থাকতে হবে”।
এর সাথে অভিনেত্রী আরো বলেন, “ছোটবেলায় মা-বাবা তাঁদের সন্তানকে সাইকেল কিনে দেন, তাহলে কি আমাদের সাইকেল শেখা হয়ে যায়?” সাইকেল যেমন সবাইকে নিজের চেষ্টায় শিখে নিতে হয় তেমনি সুবান এর দেওয়া প্লাটফর্মে তিনি নিজের চেষ্টায় নিজের জায়গা করেছেন। ভবিষ্যতে নিজেকে আরো যোগ্য প্রমাণিত করতে পারবেন এটাই আশা রাখেন অভিনেত্রী। প্রসঙ্গত পর্দার নিখিল আর শ্যামাকে আরো একবার জুটি বেঁধে দেখতে পাওয়া যাবে। স্টার জলসায় আসছে এই জুটির নতুন ধারাবাহিক “বাংলা মিডিয়াম”। আবারো একবার নীল ভট্টাচার্য এবং তিয়াসা লেপচার অনুরাগীরা পর্দায় দেখবেন এই জুটিকে।