মাত্র ২ টাকার বিনিময়ে ছাত্র-ছাত্রী পড়ান এক শিক্ষক, সংসার চলে পেনশনের টাকায়, শিক্ষকের কথা শুনে অবাক সৌরভ গাঙ্গুলীও, মানবতা সত্যিই এখনো বেঁচে আছে
দাদাগিরি জি বাংলার জনপ্রিয় গেম রিয়্যালিটি শো। টেলিভিশন জগতের অন্যতম জনপ্রিয় শো এটি। দীর্ঘদিন ধরে জি বাংলার পর্দায় সম্প্রচারিত হচ্ছে দাদাগিরি। শুরু থেকেই এই শোয়ের সঞ্চালনার দায়িত্বে রয়েছেন সকলের প্রিয় দাদা। সৌরভ গাঙ্গুলীকে ছাড়া দাদাগিরির মঞ্চ রীতিমতো অসম্পূর্ণ। দাদাগিরির প্রতি এপিসোডে থাকে নতুন নতুন চমক। এই মঞ্চে তারকা থেকে সাধারণ সকলেই নিজেদের গল্প জানাতে আসেন। এমন অনেকেই রয়েছেন যারা বাস্তবে নিজেদের দাদাগিরির গল্প বলতে আসেন এই মঞ্চে। সম্প্রতি দাদাগিরির পুরনো একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও টিতে এক শিক্ষককে দেখা গিয়েছে যিনি মাত্র দু’টাকার বিনিময়ে পড়ান ছাত্র-ছাত্রী। তার ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৩০০’র বেশি। তিনি সায়েন্স ছাড়াও পড়ান সমস্ত বিষয়। তার কাছ থেকে পাশ করেছেন বহু মেধাবী ছাত্রও। সেই শিক্ষকের কথায় তিনি একসময় যাদের পড়িয়েছেন তাদের নাতি-নাতনিরাও এখন তার কাছে পড়তে আসেন। বর্তমান যুগে দাঁড়িয়েও এমন মানুষ রয়েছে তা শুনেই রীতিমত অবাক হয়েছিলেন স্বয়ং দাদাও। তিনি জানান, তিনি ক্লাস নাইন থেকে ডিগ্রী কোর্স পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ান। শিক্ষকতাই তার জীবনের মূলমন্ত্র।
এই শিক্ষকের কথা শুনে সৌরভ গাঙ্গুলী তাকে জিজ্ঞাসা করেন, এই পারিশ্রমিকে তার সংসার চলে কিনা! এর উত্তরে তিনি বলেন ঐ টাকা দিয়ে তিনি সংসার চালান না। ৪০ বছর স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন তিনি। অবসর নেওয়ার পর তিনি পেনশন পান, সেই টাকা দিয়েই চলে তার সংসার। বিনা পারিশ্রমিকে পড়ানো উচিৎ নয় বলেই তিনি এই দুই টাকা নেন। তার কথায়, তার কাছে শুধুমাত্র গরীব ছাত্রছাত্রীরাই পড়তে আসেন না, আসেন অনেক মেধাবী অবস্থাপন্ন ছাত্রছাত্রীরাও। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এমন শিক্ষক পাওয়া সত্যিই কঠিন। একজন ভালো শিক্ষক হওয়ার পাশাপাশি তিনি যে একজন ভালো মানুষও, তা আর আলাদাভাবে বলার প্রয়োজন পড়ে না।
কথায় কথায় সৌরভ গাঙ্গুলী তাকে আরও জিজ্ঞাসা করেন, ৫৪ বছরের এই শিক্ষকতা জীবনে তিনি কী কী পরিবর্তন দেখেছেন! এর উত্তরে তিনি জানান, আগেকার দিনে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের শিক্ষককে যেখানেই দেখতেন সেখানে নিজে থেকে এসে কথা বলতো এবং প্রণাম করে যেত। তবে বর্তমান যুগে সেই সমস্ত জিনিস হারিয়েছে। এখন বেশিরভাগ জন দেখেও না দেখে চলে যান। তাদের মনোসংযোগ থাকে সেই মুঠোফোনেই। তবে দাদাগিরির মঞ্চে এমন একজন মানুষকে পেয়ে খুশি হয়েছিলেন সকলে। আজকের যুগে দাঁড়িয়ে এমন মানুষ পাওয়া সত্যিই কঠিন।