কোন ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে টলিউড ইন্ডাস্ট্রি থেকে সরে এসে ছিলেন অভিনেত্রী অনন্যা চ্যাটার্জি? জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেত্রী হয়েও কেন যোগ্য সম্মান পাননি ইন্ডাস্ট্রিতে
জি বাংলার এককালের জনপ্রিয় ধারাবাহিক সুবর্ণলতার কথা আশা করি আপনাদের সকলের মনে আছে। ধারাবাহিকে সুবর্ণলতার চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী অনন্যা চট্টোপাধ্যায় তা কেউ আশা করি আপনারা সকলেই চেনেন এবং মনেও আছে। টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে বর্তমানে তাকে দেখা না অভিনেত্রীর অল্প কয়েকটি কাজ দিয়েই তিনি সকলের মন জয় করে নিয়েছিলেন। তার অভিনয় প্রতিটি মানুষের মনেই দাগ কেটে গিয়েছিল। তবে দীর্ঘ কয়েক বছর কেটে গিয়েছে অভিনেত্রীকে আর টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যায় না।
একসময় সেরা অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন। তবে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী কেন আর টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে না তা নিয়ে অসংখ্য প্রশ্ন ছিল মানুষের মনে। রাজনীতি নাকি অন্য কোনো কারণ ছিল অভিনেত্রীর টলিউড থেকে সরে আসার পেছনে? অভিনয়ের পাশাপাশি দুর্দান্ত নৃত্যশিল্পী হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। মমতা শঙ্করের ডান্স একাডেমি তে তার প্রতিদিন নৃত্যচর্চা চলত।
সেখান থেকেই অভিনয়ের সুযোগ আসে। তার প্রথম ধারাবাহিক ‘দিন প্রতিদিন’ এরপর ‘তিথি অতিথি’। তারপর ধীরে ধীরে বেশ কয়েকটি কাজ করেছিলেন তিনি। অসংখ্য টেলিফিল্মেও তার অভিনয় চোখে পড়ার মতো ছিল। এরপর ২০০২ সালে প্রথমবার বসু চ্যাটার্জী পরিচালিত ‘টক ঝাল মিষ্টি’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় পদার্পণ করেন। এরপরের ছবি রাত বারোটা পাঁচ এ ও তার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল। তারপর ২০০৯ সালে নিজের গন্ডী থেকে বেরিয়ে আদ্যপ্রান্ত বানিজ্যিক ছবি ‘মামা ভাগ্নে’তে অভিনয় করেন তিনি। তবে এরপর আর কমার্সিয়াল ছবিতে দেখা যায়নি তাকে।
কথায় আছে রতনে রতন চেনে। ঠিক সেরকমই সেই সময় টলিউডের জনপ্রিয় পরিচালক ছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। নিজের ছবি আবহমানের মাধ্যমে প্রথম তিনি অভিনেত্রী অনন্যা চট্টোপাধ্যায় কে অভিনয়ের সুযোগ দেন। এই ছবিতে নিজের অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকের কাছে বিপুল পরিমান ভালোবাসা পেয়েছিলেন অভিনেত্রী। মমতা শংকর, যীশু সেনগুপ্ত, দীপঙ্কর দের মত অভিনেতাদের সঙ্গে অভিনয় করে সেরা অভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কার নিজের ঝুলিতে জমা করেন তিনি।
এরপর তার কাজ বহুল প্রচলিত সুবর্ণলতা ধারাবাহিক। জি বাংলার এই ধারাবাহিক দর্শক আজও মনে রেখেছে। অভিনেত্রী অনন্যা চ্যাটার্জী অভিনয় আজও দর্শকের মনে থেকে গিয়েছে। এই সমস্ত দুর্দান্ত অভিনয় পরেও টলিউডের এরপর তাকে আর দেখা যায়নি একেবারে যেন উধাও হয়ে গেলেন ইন্ডাস্ট্রি থেকে।
অভিনেত্রীর বৈবাহিক জীবনও সুখের হয়নি। বিয়ের চার বছর পরেই তাঁর স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এর পরে তাকে দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর পরে অন্য আরেকটি ধারাবাহিক জয় কালী কলকাত্তাওয়ালী তে দেখা গিয়েছিল। অভিনেত্রী জানিয়েছেন বাজে কাজ করার থেকে বাড়িতে বসে বই পড়া ভালো। তিনি কাজের জন্য কোন পরিচালকের কাছে হাত পাততে বা তাদের পায়ে ধরতে নারাজ।