Story

শিক্ষিকা থেকে ফুটপাথ হয়ে মানসিক হাসপাতাল! রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শ্যালিকা মীরা ভট্টাচার্যের বোনের এ কী পরিণতি, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শ্যালিকার জীবন সিনেমাকেও হার মানায়, বহু বছর বাদে খুঁজে পাওয়া গেল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শ্যালিকাকে, এতদিন পথেই ভিখারী বেশে ঘুরে বেড়াতেন তিনি

পরনে ছেঁড়া জামা কাপড়, মাথায় ভর্তি ময়লা, জট পড়ে গেছে চুলে। ডানলপ চত্বরের আশেপাশেই ঘুরে বেড়াতেন এই বৃদ্ধ মহিলা। কাঁধে একটা ঝুলি নিয়ে কখনো চায়ের দোকান বা কখনো খাবারের দোকানে ঘুরে বেড়াতেন তিনি। দোকানদাররা বেশিরভাগ সময়ে তাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিতেন এমনকি পথে মানুষেরাও তাকে এড়িয়ে চলতেন পাশ কাটিয়ে যেতেন।

সেই বৃদ্ধার দাবি তার নাম ইরা বসু। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের একমাত্র শ্যালিকা তিনি। তার মুখে স্পষ্ট ইংরেজি এবং বাংলা ভাষা শুনে যে কেউ বলতে পারবেন তিনি খুব শিক্ষিত পরিবারের একজন একসময় খরদা অঞ্চলের একটি নামী স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন ইরা দেবী। খোঁজ নেওয়ার পর জানা গিয়েছে খরদাহ র প্রিয়নাথ বালিকা বিদ্যালয়ের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষিকা ছিলেন তিনি। আজ তার ঠাঁই হয়েছে রাস্তায়।

বায়োলজি তে পিএইচডি করেছেন তিনি। জানা গিয়েছে ২০০৯ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেছেন। তবে হঠাৎ তার এমন দশা কি করে? এই সম্পর্কে ইরাদেবীর সহকর্মীরা ও তার ছাত্রীরা জানিয়েছেন অনেকবারই পড়ুয়ারা, শিক্ষিকারা সংগঠনের সদস্যরা মিলে তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ইরা দেবী ফেরেননি, কোনোদিনও কারও থেকে সাহায্য নিতে চাননি তিনি। এক কাপ চা তাও নিজের পয়সাতেই কিনে খান। তিনি স্পষ্ট জানান “আমি নিজের খাবারের খরচ নিজেই চালাই। রাস্তার ভিখারি নই।” তিনি এও জানান জামাইবাবু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলেও তার থেকেও কোনও সুবিধা তিনি নেননি।

খরদাহ এর একজন ব্যবসায়ী রবি দাস জানান, শিক্ষক দিবসে দিন তিনি নিজের টাকায় চিকেন বিরিয়ানি ও মাটন খাইয়েছেন। ডানলপ এর ট্রাফিক গার্ড জানান কখনো ভিক্ষা করেননি তিনি, নিজের পয়সা তেই খাবার কিনে খেয়েছেন তিনি।

২৮ শে জানুয়ারি দিনটি তার সঙ্গে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, ওই দিন তিনি শিক্ষিকা জীবন থেকে অবসর নিয়েছেন। ঐদিন নিজের সাধ্যমত তিনি ৬০ জন দুস্থ ছাত্রছাত্রীকে রুপোর চামচ, পেন্সিল, বই-খাতা ইত্যাদি দান করেন।

মিডিয়ার দৌলতে এত বছর পরে সকলের সামনে আসলেন ইরাদেবী। খড়দাহ পৌরসভার পক্ষ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে থাকে বরানগর থানায় নিয়ে যাওয়া হয় সেখান থেকেই কলকাতার একটি মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এটা দেবীকে সেখানেই বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে।

Back to top button

Ad Blocker Detected!

Refresh