মদ্যপ অবস্থায় পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর মেয়ে চুমকি চৌধুরীর গায়ে হাত তুলেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা লোকেশ ঘোষ, নিজের ভুলেই কেরিয়ার শেষ হয়ে যায় এই সুপারস্টার অভিনেতার
৯০ দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন লোকেশ ঘোষ। একসময় বাংলা চলচ্চিত্রে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা। বর্তমানে তাকে বেশ কয়েক বছর হল টেলিভিশনের বড় পর্দায়, ছোটপর্দা কোথায় দেখা যায় না। আজ আমরা জনপ্রিয় এই অভিনেতা সম্পর্কে কথা বলব।
তবে সোশ্যাল মিডিয়াতে ইন্টারনেটে কোথাও এই অভিনেতার সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য দেওয়া নেই, হয়তো তিনি তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নেট মাধ্যমে আনতে চাননি। যার কারণেই তার পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে কোন তথ্যই ইন্টারনেট নেই। লোকেশ ঘোষের বড় হয়ে ওঠা মুম্বাই শহরে। ছোট থেকেই অভিনেতা প্রচন্ড নাছোড়বান্দা দুষ্টু এবং ডানপিটে স্বভাবের ছিলেন। বাবা-মাকে না জানিয়ে স্কুল পালানো, বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়া ইত্যাদি করে থাকতেন তিনি। ছোটবেলায় একসময় লুকিয়ে সিগারেট খাওয়ার সময় তিনি বাবার হাতে ধরা পড়েন, তারপরে তার বাবা তাকে শাস্তি স্বরুপ বাড়ির বাইরে এক সপ্তাহ বেরোতে দেয়নি।
মুম্বাই শহরে তিনি বেশ কয়েকটি সিনেমায় পার্শ্বচরিত্র হিসেবে কাজ করেছিলেন তবে সেখানে সেরকম কোনো ক্ষতি বা জনপ্রিয়তা আসেনি করেননি তিনি বাংলা এবং উড়িষ্যা ভাষার বিভিন্ন ছবিতে কাজ করেন। বাংলার বিভিন্ন চলচ্চিত্রে অভিনয় করার পর তার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে এবং একসময় বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে নিজের পরিচয় গড়ে তোলেন। বাংলায় অভিনেত্রী তার প্রথম ছবি হলো অঞ্জন চৌধুরী পরিচালিত ‘নাগ নাগিনী নাচ রে’। এরপর অঞ্জন চৌধুরীর হাত ধরে একের পর এক জনপ্রিয় ছবিতে কাজ করেন লোকেশ ঘোষ। লোফার, জীবন নিয়ে খেলা, মুখ্যমন্ত্রী, আসল নকল, বারুদ ইত্যাদি জনপ্রিয় ছবিতে আমরা অভিনেতাকে অভিনয় করতে দেখতে পাই।
অভিনেতার অভিনয় দর্শকদের মন কারে। আর অভিনেতা লোকেশ ঘোষের বিপরীতে বেশিরভাগ ছবিতে নায়িকার চরিত্রে দেখা গিয়েছে অঞ্জন চৌধুরীর বড় মেয়ে চুমকি চৌধুরী কে। ছবিতে অভিনয় করার সময়ই চুমকি এবং লোকেশন মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় এবং পরিবারের সকলের সম্মতিতেই লোকেশ এবং চুমকি সাত পাকে বাঁধা পড়েন। তবে বেশিদিন এই সম্পর্ক টেকে না কারন তথ্য সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে লোকেশ বিয়ের পরে অতিরিক্ত মদ্য পান করতেন এবং কখনো কখনো নেশার ঘোরে চুমকি চৌধুরীর গায়ে হাত তুলতেন। যার ফলে পরবর্তীকালে চুমকি এবং লোকেশ এর মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে এবং অঞ্জন চৌধুরীর নিজের কোম্পানি থেকে লোকেশ কে বার করে দেয়।
এর কারণেই পরবর্তীকালে লোকেশ ঘোষ কি আর কোন ছবিতে দেখা যায়নি। ছোটখাটো কয়েকটি ছবিতে কাজ করলেও সেই ছবিগুলি একেবারেই জনপ্রিয়তা লাভ করেনি দর্শক মহলে। তার শেষ ছবি ২০১৩ সালের ‘ভগবানের মাথায় হাত’। একসময় শোনা গিয়েছিল যে নিজের এক গায়িকা বান্ধবীকে ফ্ল্যাটে নিয়ে মারধর করে ছিলেন অভিনেতা। ওই মহিলার সঙ্গে লোকেশন বন্ধুত্ব ছিল দীর্ঘ দুই বছরের। ওই মহিলা অভিযোগ জানিয়েছেন যে লোকেশ তাকে নিজের ফ্ল্যাটে ডাকেন পেট ব্যথার কথা বলে। এবং ফ্ল্যাটে গিয়ে ওই মহিলা লোকেশ কে মদ্যপ অবস্থায় পান এবং লোকেশ এর মোবাইল ফোন ঘেঁটে তিনি জানতে পারেন যে লোকের সঙ্গে একাধিক মেয়ের সম্পর্ক রয়েছে যার কারণে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ঝগড়াঝাটি হয়। এরপরে মারামারি পর্যায়ে চলে যায় তাদের ঝামেলা এবং রাত এগারোটার সময় সেই মহিলা কসবা থানায় লোকেশ ঘোষের নামে অভিযোগ জানায়। আর এই থেকেই বোঝা যায় যে অভিনেতা লোকেশ কি ধরনের মানুষ ছিলেন।