বাথরুমের থেকেও ছোট ছিল ঘর, ছোট ঘরে পরিবারের সাথে নুন ভাত খেয়ে থাকতেন শ্বেতা ভট্টাচার্য, ‘যমুনা ঢাকি’র জীবন যেন সিনেমা
শ্বেতা ভট্টাচার্য টেলিভিশন পর্দার পরিচিত অভিনেত্রী। নয় নয় করে বেশ অনেকগুলো বছর কাটিয়ে দিলেন এই বিনোদন জগতে। স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘সীমন্তিনী’র হাত ধরে টেলি জগতে অভিনেত্রী হিসেবে পা রেখেছিলেন শ্বেতা। পরবর্তীকালে তার অভিনয় তাকে পরিচিতি এনে দিয়েছে দর্শকদের মাঝে। তবে একটা সময় একটি ছোট্ট ঘরের মধ্যে নিজের পরিবারকে নিয়ে নুন ভাত খেয়ে থাকতেন অভিনেত্রী। ‘দিদি নম্বর ১’এর আগের কোনো এক সিজনে নিজের বাবাকে নিয়ে খেলতে এসে নিজের জীবনের কথা জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
একটা সময় ছিল যখন তিনি নিজের পরিবারকে নিয়ে একটি ছোট্ট ঘরে দিন কাটাতেন। সেটাই তাদের কাছে সবকিছু ছিল। এমন অনেক দিন গেছে যখন তারা শুধুমাত্র নুন ভাত খেয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন একটা গোটা দিন। দুপুরে খাওয়ার পর রাতে আদেও খেতে পাবেন কিনা তার কোন ঠিক ছিলনা। সেই জায়গা থেকে উঠে এসে আজ তিনি টেলিভিশন পর্দার শ্বেতা ভট্টাচার্য হতে পেরেছেন।
একটা সময় বাবার হাত ধরে ‘ডান্স বাংলা ডান্স’এর প্রতিযোগী হিসেবে স্টুডিও পাড়ায় এসেছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন শ্বেতা ভট্টাচার্য। তখনো তার পড়াশোনা শেষ হয়ে যায়নি। কি করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না সেইসময়। তবে সেই অস্থিরতার সময় তার বাবা তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি তাকে নিজে নিয়ে আসতেন স্টুডিও পাড়ায় অভিনয়ের জন্য। আর সেটাই তার শুরু ছিল। এরপর পরিচালক স্নেহাশিস চক্রবর্তীর দৌলতে পরপর দুটি জনপ্রিয় বাংলা ধারাবাহিকে অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে যান। দুটি ধারাবাহিকই ছিল জি বাংলার। ‘জড়োয়ার ঝুমকো’ ও ‘তুমি রবে নীরবে’ ধারাবাহিকে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করার দৌলতে দর্শকদের মাঝে অভিনেত্রী হিসেবে এক বিপুল পরিচিতি অর্জন করেন তিনি।
‘দিদি নম্বর ১’এ এসে তিনি এও জানিয়েছিলেন, তার দাদাকে ঘটনাচক্রে হারিয়েছেন তিনি। তার কাছে এই মুহূর্তে তার বাবা-মা’ই সব। তিনি নিজের পরিবারকে ভীষণ ভালোবাসেন। ছোটবেলায় অভিনেত্রীর বাবা-মা নিজেদের সমস্ত শখ-আল্লাদ সরিয়ে রেখে তাকে ভালো রাখার চেষ্টা করতেন। তার কোন জিনিস পছন্দ হলে সেটা এনে দেওয়ার চেষ্টা করতেন তার কাছে। তাই এখন সে নিজের সাধ্যমত তার বাবা-মাকে খুশি রাখার চেষ্টা করে। তবে একজন ভালো অভিনেত্রী হওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন ভালো নৃত্যশিল্পীও। এই বিনোদন জগত সম্পর্কে তার কোন ধারণা ছিল না। তবে ডান্স বাংলা ডান্সে অংশগ্রহণ করতে আসার পরেই সেই সুযোগ আসে তার কাছে। তিনি এও জানিয়েছিলেন, নাচ তার জীবনের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
তিনি সেইসময় জানিয়েছিলেন, অনেকসময় বাবার পরিবর্তে মাও তাকে স্টুডিও পাড়ায় ছাড়তে। কিন্তু বর্তমানে তার মা ভীষণভাবে অসুস্থ। এমনকি দুবার স্ট্রোক পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে। বাড়ি পৌঁছাতে দেরি হলে কিংবা ফোন না ধরলে রীতিমতো প্যানিক অ্যাটাক হয় তার মায়ের। দিদি নম্বর ১’এর মঞ্চে এসে নিজের জীবনের লড়াইয়ের কথা জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। আপাতত জি বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘যমুনা ঢাকি’তে যমুনার চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি।