দেশের ৫ মহিলা IPS অফিসারের সাফল্যের গল্প, মেয়েদের ইচ্ছাশক্তি ও সাহসীকতার দৃষ্টান্ত
তোমার সাথে সাথে যুগ এগিয়ে গেছে অনেকটা। মেয়েরা এখন শুধুমাত্র ঘরে বসে থাকে না। ছেলেদের পাশাপাশি তারাও রোজগার করে সংসারের জন্য, নিজের জন্য। অনেক বিষয়ই মেয়েরা এখন ছেলেদের পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন কম্পিটিটিভ পরীক্ষার ক্ষেত্রেও মেয়েরা এখন টেক্কা দিচ্ছে ছেলেদের।
বর্তমানে ছেলেদের পাশাপাশি সিভিল সার্ভিস বা দেশের অন্যান্য যেকোনো বড় পরীক্ষা গুলিতে বসার সুযোগ পাচ্ছে মেয়েরাও। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও এই বড় পরীক্ষাগুলিতে সমান ভাবে সাফল্য অর্জন করছেন। IAS, IPS সকল ক্ষেত্রেই মেয়েরা আজ অনেকটাই এগিয়ে। এমনই ৫ এগিয়ে যাওয়া মেয়ের গল্প জেনে নেব আজ। যারা ঘর ও বাইরে দুটোই সামলাচ্ছেন।
১) কিরণ বেদি: ভারতের প্রথম মহিলা আইপিএস অফিসার কিরণ বেদি। ১৯৭২ সালে কিরণ বেদি পুলিশ সার্ভিসে যোগদান করেণ। প্রায় ৩৫ বছর তিনি এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০০৭ সালে কিরণ বেদি স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেণ। তিনি ব্যুরো অব পুলিশ রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর ডিরেক্টর জেনেরেলের পদে কাজ করতেন।
দিল্লী, গোয়া, চন্ডীগড়, মিজোরাম ও তিহার জেলে কাজ করেছেন তিনি। তিনি তার নিজের কাজ সম্পর্কে বেশ সচেতন ছিলেন এবং তা যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে করতেন। এছাড়াও দীর্ঘদিন দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন কিরণ বেদি। বিখ্যাত রামন ম্যাগসাসাই পুরস্কার পান তিনি ২০০৪ সালে। এছাড়াও একাধিক রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন ভারতের প্রথম মহিলা আইপিএস অফিসার।
২) কাঞ্চন চৌধুরী ভট্টাচার্য: দেশে কিরণ বেদির পর দ্বিতীয় মহিলা আইপিএস অফিসার হন কাঞ্চন চৌধুরী ভট্টাচার্য। তিনিই উত্তরপ্রদেশ ক্যাড্রের প্রথম মহিলা আইপিএস অফিসার। ১৯৯৭ সালে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পান। ওই একই বছরে রাজীব গান্ধী পুরস্কারও পান। এরপর ২০০৭ সালে তিনি স্বেচ্ছায় তার কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়ে নেন।
৩) অর্চনা রামাসুন্দরম: ১৯৮০ সালে শ্রীমতি অর্চনা রামাসুন্দরম আইপিএস অফিসার হন। আইপিএস অফিসার হওয়ার আগে তিনি রাজস্থান ইউনিভার্সিটিতে লেকচারার হিসাবে ছিলেন। সিবিআই এর প্রথম মহিলা অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। পরে তিনি চেন্নাইয়ের এসপি হন। সাহসিকতার জন্য পুলিশ পদক পান তিনি ১৯৯৫ সালে। কেন্দ্রীয় সরকারের ডেপুটেশনের জন্যও ১৯৯৯ সালে নিযুক্ত হয়েছিলেন।
৪) মীরা বোরওয়ানকর: ভারতের পর এবার মহারাষ্ট্র। মহারাষ্ট্রের প্রথম মহিলা আইপিএস অফিসার ছিলেন মীরা বোরওয়ানকর। মুম্বাইয়ে সিবিআইয়ের অর্থনৈতিক অপরাধ শাখায় কাজ করেছেন তিনি। পরবর্তীকালে দিল্লীতে সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার ডিআইজি পদে ছিলেন মীরা বোরওয়ানকর।
তিনি মুম্বাইয়ে ক্রাইম ব্রাঞ্চের প্রথম মহিলা প্রধান হিসেবে যুক্ত হন ২০০১ সালে। কুখ্যাত জলগাঁও যৌন কেলেঙ্কারিতে প্রধান তদন্তকারী অফিসার ছিলেন ইনি। নিজের কাজের জন্য একাধিক রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। মীরা বোরওয়ানকর ১৯৯২ সালে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও পান।
৫) সংযুক্তা পরাশর: ২০০৬ সালে আইপিএস অফিসার হয়েছিলেন সংযুক্তা পরাশর। রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে গ্রাজুয়েশন পাশ করেছেন তিনি। এরপরে জেএনইউ থেকে মাস্টার্সও পাশ করেছিলেন তিনি। এরপরই আইপিএস অফিসার হিসেবে যোগদান করেণ। ২০০৮ সালে অবৈধ বাংলাদেশি জঙ্গিদের সাথে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। সেই দায়িত্ব তিনি খুবই দক্ষতার সাথে পালন করেছিলেন। এছাড়াও সামাজিক কাজকর্ম, ত্রাণ দেওয়া, দুঃস্থ ও গরিব মানুষদের সেবা করতেন।
সমাজের বাঁধাধরা নিয়ম ভাঙা ৫ মেয়ের সাফল্যের গল্প। তারা নিজেদের ইচ্ছাশক্তি ও সাহসীকতার জোড়ে পৌঁছেছেন সাফল্যের চূড়ায়।