‘সুলেখা কালি, কলঙ্কের চেয়েও কালো’! স্বদেশি আন্দোলনে গভীর দাগ ফেলেছিল এই কালি, নতুন রূপে আবারো বাজারে ফিরতে চলেছে বাংলার নিজস্ব সুলেখা কালি, জানেন কি ভারতে প্রথম ফাউন্টেন পেনের কালি তৈরি শুরু করেছিলেন দুই বাঙালি
ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে যখন বাংলা তথা সারা ভারতবর্ষে শুরু হয়েছিল স্বদেশী আন্দোলন, তখনই মহাত্মা গান্ধী থেকে শুরু করে অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উৎসাহে ভারতবর্ষের শুরু হয়েছিল বিদেশ থেকে আনা দ্রব্যের বয়কট।পাশাপাশি ভারতীয়রা নিজেরাই নিজেদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের উৎপাদন শুরু করেছিল। সে সময় ভারতবর্ষে মূলত ব্যবহৃত হতো বিদেশি কালির ঝরনা কলম। কিন্তু স্বদেশী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে রাজশাহীর স্বাধীনতা সংগ্রামী অম্বিকা চরণ মৈত্র এবং সত্যবতী মৈত্রের দুই সন্তান, ননীগোপাল এবং শঙ্করাচার্য মৈত্র শুরু করেছিলেন নিজেদের কালির ব্যবসা।
১৯৩৪ সালে রাজশাহীতে প্রথম উৎপাদিত হয় সুলেখা কালি। বিদেশি কালির বিরুদ্ধে সুলেখা হয়ে ওঠে জাতীয়তাবাদী প্রতিবাদ। জানা যায় আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র থেকে শুরু করে সতীশচন্দ্র সামন্ত এর মত ব্যক্তিত্বরা উদ্যোগ নিয়েছিলেন এই কালি বিক্রির। পাশাপাশি ব্যবসায় হাত মিলিয়েছিলেন মৈত্র পরিবারের মেয়েরা। মূলত তারাই কালি তৈরি করতেন এবং বাড়ির পুরুষরা ঘুরে ঘুরে সেই কালি বিক্রির ব্যবস্থা করতেন।
ইতিহাস বলে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নামকরণ করেছিলেন এই কালির। পাশাপাশি বিধানচন্দ্র রায়ের মত ব্যক্তিত্ব এই কালির বিজ্ঞাপনে উপস্থিত হয়ে বিক্রি বাড়াতে সহায়তা করেছিলেন। সুলেখার বর্তমান ডিরেক্টর কৌশিক মৈত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন সুলেখা কালির চাহিদা কমে যাওয়ায় উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু বর্তমানে আবারো বাড়ছে সুলেখা কালির চাহিদা।
তাই তারা স্কুল-কলেজের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহিত করছেন সুলেখা কালির ঝর্ণা পেন ব্যবহার করতে। পাশাপাশি নতুন রূপে সুলেখা কালিকে আবারো বাজারে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছেন তারা।