‘একজন এত বড় সেলিব্রেটি কী করে এত বিনম্র হতে পারে?’ – পাড়ার রিকশা চালক পর্যন্ত অরিজিতের বন্ধু! সবটা জেনে হতবাক হবেন দর্শক
অরিজিৎ সিং, বর্তমানে ভারতীয় সংগীত জগতের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র। শুধু তাই নয় ভারতীয় সংগীতকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছেন সংগীত শিল্পী। তবে বিশ্বসেরা এই সংগীত শিল্পী অরিজিৎ সিং কিন্তু বাংলার খুবই সাধারণ পরিবারের একটি ছেলে। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ নামক ছোট্ট একটি গ্রামের ছেলে সে। কিন্তু সেখান থেকে দীর্ঘদিন ট্রাভেল করে আজকের এই জায়গায় পৌঁছেছেন অরিজিৎ।
‘গুরুকুল’ নামক একটি রিয়েলিটি শো দিয়ে গানের জগতে পা রাখেন তিনি। সেখানে বিজয়ী হতে পারেননি। কিন্তু বর্তমানে তাঁর সাফল্য, খ্যাতি, ঐশ্বর্য সবটাই আকাশ ছোঁয়া। কিন্তু এত কিছু পাওয়ার পরেও একেবারেই বিনম্র এই শিল্পী। চোখ আকাশে রেখেও মাটিতে কিভাবে পা রাখতে হয় তা শেখাচ্ছেন অরিজিৎ।
তবে এবার বাংলার আরেক জনপ্রিয় গায়িকা ইমন চক্রবর্তী বললেন জিয়াগঞ্জের এক সামান্য রিক্সা চালক অরিজিতের বন্ধু। যদিও এটা প্রথম নয় এর আগেও বহু তারকারায় নিজেরাই জানিয়েছেন আরিজিতের সাথে যারা আলাপ করেছেন তাঁরা জানেন অভিজিৎ কতটা মাটির মানুষ। বর্তমানে ভারতের বাংলা থেকে হিন্দি ভাষাতে সমান দক্ষতার সাথে প্রচুর গান গেয়েছেন এই শিল্পী। প্রেমের গান থেকে দুঃখ এমনকি পার্টি মিউজিক থেকে মন শান্ত করার গান সব ধরনের গানেই অবাধ বিচরণ তাঁর। তাঁর গানের মাধুর্য যেন টেনে নিয়ে আসে শ্রোতাদের। কিন্তু নিজের এতটা সাফল্যের পরেও একেবারে সাধারন জীবন যাপন করতে পছন্দ করেন অরিজিৎ।
শুধু দেশ নয় বিদেশেও এই সঙ্গীতশিল্পীর অবন্তী ভক্তের সমাহার রয়েছে। ফলে বিদেশেও কনসার্ট করতে দেখতে পাওয়া যায় তাঁকে। একথাও ঠিক যে তাঁর এক একটি শো এর টিকিট কয়েক লক্ষ টাকা। এত অর্থ খ্যাতি নাম যশ তারপরেও একেবারে মাটি দিয়ে গড়া অরিজিৎ। তাঁর নেই কোন অহংকার নেই কোন তারকা সুলভ আচরণ।
১৯৮৭ সালের ২৫ শে এপ্রিল মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের একদম মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৫ সালে তৎকালীন জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো গুরুকুলে অংশগ্রহণ করে অরিজিৎ। সেই সময় তাঁর বয়স মাত্র ১৮। কিন্তু বিজয়ী হওয়া হয়নি তাঁর। একটি রিয়েলিটেশনের বিজয়ী হতে না পারলেও এরপর থেকেই নিজের গান দিয়ে সকলের মন জয় করে নিতে থাকেন তিনি। শুরু করেন প্লে ব্যাক সিঙ্গিং। এর পর দীর্ঘ লড়াই। নিজের গান দিয়ে মানুষকে হাসানো থেকে কাঁদানো এতদিনে সবটাই করে ফেলেছেন অরিজিৎ।
বিশ্বজোড়া খেতের পরেও জীবনে কোন বিলাসিতা আসেনি তাঁর। নিজের জন্মস্থান জিয়াগঞ্জে একটা সামান্য স্কুটি করে ঘুরে বেড়ানোর অভিজিৎ। একজন সাধারণ বাবার মত স্কুটি করে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দেন। দামি বিলাসবহুল গাড়ি থাকলেও সেগুলিকে কখনোই তিনি প্রয়োজন মনে করেন না। নিজের কিংবা পরিবারের বিলাসবহুলতা আসতে দেননি তিনি। যা উপার্জন করেন তাঁর বেশিরভাগটাই তিনি লাগিয়ে দেন সমাজের কাজে। সম্প্রতি অরিজিতের ১০০ কোটি টাকার প্রয়োজন ছিল। কারণ তিনি একটি বিশ্বমানের স্কুল গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।
এই বিশ্বমানের জ্ঞান, অর্থ, সাফল্য, সমৃদ্ধি, খ্যাতি পাওয়ার পরেও একেবারেই সাধারণ জীবন যাপন করেন অরিজিৎ। যেখানে নিচ স্তরের তারকাদেরও মানুষ নাগাল পায় না। সেখানে অরিজিত এমন একজন যিনি বিশ্বমানের তারকা হওয়ার পরেও সাধারণ মানুষের সাথে থাকতে পছন্দ করেন। পাড়া রিকশাওয়ালা চায়ের দোকানের দাদা এরা সবাই মোটামুটি তাঁর বন্ধু। বাড়িতে মোটামুটি সময় পেলেই এদের সাথে আড্ডা দিয়ে সময় কাটানো গায়ক। আর সম্বন্ধে যতই বলা যাবে সবটাই হয়তো কম পড়বে। প্রসঙ্গত কিছুদিন আগেই জনপ্রিয় লেখক শ্রীজাত অরিজিৎ সম্পর্কে প্রশংসাসূচক বাক্যে বলেছিলেন, ‘অরিজিতকে দেখা যায় কিন্তু তাকে অনুসরণ বা অনুকরণ কোনোটিই করা যায় না। ও একেবারে মাটির মানুষ’।