শৈশবেই পিতৃ ও মাতৃ বিয়োগ হয়, মোটেই সোজা ছিল না ‘সন্ধ্যা রায়’ হয়ে ওঠার পথ!
যখন একটা বাচ্চা বাবা-মাকে আঁকড়ে ধরে তার জীবনে বাচতে শেখে, নিরাপদ আশ্রয় থেকে সে নিজের স্বপ্ন দেখতে শেখে, নিজেকে একটু একটু করে চিন্তা শেখে, নির্দ্বিধায় নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানোর মূল্য বুঝতে শেখে ঠিক সেই সময়ই সন্ধ্যা রায়ের জীবনের দুই লাইফ লাইন বাবা ও মা তাকে ছেড়ে চলে যান। তিনি তখনও শৈশবের ঘরে। বাবা-মায়ের আদর যত্নের মূল্য সবে বুঝতে শিখেছেন, তখনো তিনি বুঝতেও শেখেন নি নিজের স্বপ্নকে। যখন তার বয়স মাত্র সাত, তিনি তার বাবাকে হারান। ঠিকঠাক দু’বছর পর তার মা তাকে ছেড়ে চলে যায়। তখন সবেমাত্র তার বয়স নয়। তার একটা ভালো আছে। তিনি তাই মামার কাছে মানুষ হতে থাকেন সেখানে থেকেই পড়াশোনা করেন।
সেই সময় সমাজে মেয়েদের কোন স্বাধীনতাই তেমন ছিল না, আর অভিনয় করার কথা সে তো অনেক দূর, সমাজে একদমই ভালো চোখে দেখা হতো না অভিনয় করার ব্যাপারটি কে, বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে। ১৯৫৭ সালে তিনি চলচ্চিত্রজগতে আসেন নিজের স্বপ্ন নিয়ে। তিনি সেখানেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন। নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে গিয়ে অনেক ওঠাপড়া এসেছে তার জীবনে, করতে হয়েছে কঠোর সংগ্রাম।
সর্বপ্রথম যে সিনেমার মধ্যে দিয়ে তিনি নিজেকে প্রকাশ করার সুযোগ পান সেটি হল ‘ মামলার ফল ‘। সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় পাশাপাশি তাকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল এই ছবিতে। তারপর একে একে তিনি সিনেমা করার সুযোগ পান। দর্শককে দেয়া সেরা সিনেমা উপহার গুলির মধ্যে হলো বাবা তারকনাথ, ঠগিনি, অশনি সংকেত, মা আমার মা, খনা প্রভৃতি।
আশির দশকে অভিনেতা অভিনেত্রীদের মধ্যে নিজস্ব একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যেত। যে বৈশিষ্ট্য ও সকলের থেকে একদমই আলাদা। বিশেষ করে এখনকার যুগে সেই সমস্ত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দেখা যায় না।