নেশাখোর, গাজাখোর এই ওয়ার্ডগুলো শুনলেই বলিউডের বিতর্কিত পুরুষের নাম সকলের মনে আসে সে আর কেউ না সঞ্জয় দত্ত। ড্রাগের নেশা থেকে শুরু করে আন্ডারওয়ার্ল্ডের মাফিয়াদের সাথে যোগ কোনটাই তার জীবন থেকে বাদ যায়নি। সেই সঞ্জয় দত্ত দেখতে দেখতে আজ ৬২ বছরের মাথায়। একাধিক নারী যোগ থেকে শুরু করে জঘন্যতম ঘটনার পিছনে সঞ্জয় দত্তের হাত আছে এমন ও প্রকাশ্যে এসেছে।
ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় তেমন আগ্রহী ছিলেন না অভিনেতা। তা ভালভাবেই বুঝতে পারেন সঞ্জয় দত্তের মা নার্গিস। তবে এক প্রকার বাবার নির্দেশেই কলেজের গণ্ডি পার করেছিলেন তিনি। বাবা সুনীল দত্ত এবং মা নার্গিস দুজনেই ছিলেন সিনেমা জগতের সাথে জড়িত।
নেশায় চুর হয়ে থাকার ঘটনা গুলির মধ্যে কিছু কিছু ঘটনা আন্দাজ করতে পারতেন মা তবে সেভাবে কিছু কখনোই বলেনি ছেলেকে। মায়ের ধারণা ছিল হয়তো ছেলে বড় হওয়ার সাথে সাথে সব পাল্টে যাবে। ড্রাগের নেশায় এতটাই বুঁদ হয়ে থাকতেন যে বাবা ছেলেকে সিনেমার কাজে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করেছিলেন। সুনীল দত্ত যেদিন প্রথম নিজের অফিসে ডেকে পাঠিয়েছিলেন ছেলেকে সেইদিন ছেলেকে ওই অবস্থায় দেখে অবাক হয়েছিলেন বাবা।
এই নেশার কারণে কখন যে মায়ের মৃত্যু হয়েছে তাও ঠাহর করতে পারেননি অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত। “পৃথিবীর এমন কোন নেশার ওষুধ নেই যেটা আমি খাইনি”, একথা নিজেই জানিয়েছিলেন বলিউডের মুন্নাভাই। ছেলের এই বদ অভ্যাস জেনেও সকলের থেকে লুকিয়ে যেতেন মা নার্গিস। সঞ্জয় দত্তের প্রথম ছবি মুক্তি পাওয়ার আগেই তার মা পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে শরীর ক্রমশ খারাপ হয়ে যাচ্ছিল তার।
ড্রাগের এই ঘটনা ছাড়াও রয়েছে ৩০০ এরও বেশি নারি যোগ। ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ে ব্লাস্ট এর ঘটনায় সঞ্জয় দত্তের নাম জড়িয়ে পড়ে। তারপর থেকেই অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিত তার সাথে সম্পর্ক থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসেন। মুম্বাইয়ে বোমা বিস্ফোরণের জন্য দায়ী গুন্ডাদের থেকে অস্ত্র এবং বিস্ফোরক গ্রহণের অভিযোগ ছিল সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে।
বেআইনি ভাবে অস্ত্র রাখার অভিযোগে সঞ্জয় দত্তকে সন্ত্রাসবাদ এবং বিশৃঙ্খলা মূলক কাজের জন্য গ্রেফতার করা হয়। এর জন্য টানা দুই বছর জেলের ঘানি ও টেনেছেন তিনি। ১৯৯৫ সালে জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন অভিনেতা সঞ্জয়। ২০১৩ সালে সঞ্জয়ের অবৈধ যৌগ আবার সুপ্রিম কোর্টে ওঠে এবং টানা পাঁচ বছরের জন্য আবার কারাবাস হয়।
জীবনে একাধিক নারীর সঙ্গে সঞ্জয় এর নাম জড়িয়েছে। ১৯৯৬ সালে প্রথম স্ত্রী রিচা শর্মা ব্রেন টিউমারের কারণ কি মৃত্যুবরণ করেন। তারপরে দ্বিতীয় বার দুই বছর পরে আবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন মডেল রিয়া পিল্লাই। তবে সেই বিয়ে ও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ফলে তৃতীয়বার বিয়ে করেন ২০০৮ সালে। মান্যতার সাথে তৃতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। বর্তমানে তাদের দুই সন্তান রয়েছে।