বাবা-মাকে নিয়ে ইঁটের বাড়িতে থাকতে চায় সে, তাই শাক বিক্রি করেই সংসারের হাল নিজের কাঁধে তুলেছে বাচ্চা ছেলে
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কোনো কিছুই আর আমাদের অজানা নেই। দেশের সমস্ত প্রান্তের যেকোন ঘটনা নিমেষের মধ্যে পৌঁছে যায় আমাদের কাছে। মুঠোফোন, ইন্টারনেটে ও সোশ্যাল মিডিয়া এই কাজ করে দিয়েছে আরো সহজ। কোন খবর পেতেই আর আমাদের বেগ পেতে হয়না। তবে এতকিছুর মাঝে এমন কিছু কিছু ঘটনা আমাদের কানে এসে পৌঁছায় বা এমন কিছু ঘটনার আমরা তার সাক্ষী হতে পারি, যা সত্যিই আমাদের মন ছুঁয়ে যায়। সম্প্রতি তেমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায়।
যে বয়সে বাচ্চারা স্কুলে যায়, খেলা করে, সেই বয়সেই আরফ হক নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে গোটা সংসারের দায়িত্ব। বাচ্চাটি বাংলাদেশের আমদই ইউনিয়নের বাসিন্দা। এইটুকু বয়সেই সংসারের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য ঘুরে ঘুরে শাক বিক্রি করে সে। আসলে তার বাবা মানসিকভাবে অসুস্থ, যার জন্য তার দেখাশোনা করার খাতিরে তার মাকে থাকতে হয় বাড়িতেই। গোরুর দুধ বিক্রি করে যেটুকু আয় করেন তার মা, তা খুবই সামান্য। এই যৎসামান্য আয় দিয়ে তাদের সংসার চলে না। তাই অগত্যা সংসারের হাল ধরতে সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে এই ছোট্ট ছেলেটি।
তার একটি দিদি রয়েছে। ইতিমধ্যেই দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তবে তার জামাইবাবু কথা বলতে পারেনা বলেই জানিয়েছে সে। সমস্ত বাধা বিপত্তিকে মেনে নিয়ে এগিয়ে চলেছে সে। তবে তার পড়াশোনা করার ইচ্ছা রয়েছে ১৬ আনা। নিজের বাবা মাকে নিয়ে ইঁটের বাড়িতে থাকবে বলে এবং পড়াশোনা করবে বলে এত খাটছে সে। সারাদিন ঘুরে ঘুরে শাক বিক্রি করে বেড়ায় আরফ। একেকদিন দুপুরবেলা ঠিকমতো খাবারও জোটেনা তার। তবে এই সমস্ত বিষয়ে সে ভেঙে পড়ে না। যেকোনো পরিস্থিতিতে তার মুখে লেগে থাকে হাসি। এতো প্রতিকূলতার মাঝেও স্বপ্ন দেখতে ভোলেনি বাংলাদেশের আরফ।
সম্প্রতি একটি ভিডিওর মাধ্যমে তার এই গল্প সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে অসংখ্য নেটিজেনদের মাঝে। তার এই লড়াইকে সম্মান জানিয়েছেন প্রায় সকলেই। তার স্বপ্ন একদিন পূরণ হবেই, এই আশাও দিয়েছেন অনেকে। তবে তাকে যদি সত্যিই কেউ সাহায্য করতে চায় তাহলে কি করে করবে! তা অবশ্য জানা নেই। তবে এই খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার পরে আশা করা যায় বাংলাদেশের কোন এক সহৃদয়বান ব্যক্তি তাকে কোন ভাবে সাহায্য করবে, তার এই পরিস্থিতি থেকে উঠে আসতে। যদি তা না হয়, তাহলে তার এই জীবনসংগ্রামের লড়াইয়ের জন্য রইল অসংখ্য শুভকামনা।