খ্যাতির বিড়াম্বনাই কাল! নেতিবাচক- ইতিবাচক দুই খ্যাতির ভয় গ্রাস করছে নন্দিনীকে! শেষে রানু মন্ডল হয়ে যাবেন না তো তিনি?
খ্যাতি জিনিসটা বড্ড সাময়িক। সেটা যখন আসার তখনই আসে। আবার এই খ্যাতির কারণে কত মানুষ শেষ হয়ে যায়। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে এই খ্যাতি বড় বিড়ম্বনার কারণ হয়ে ওঠে। আমাদের এই সমাজের কাছে এখনো কোন মহিলা যদি একটু উঁচু করে বাঁচতে শেখে কিছু সমাজবদ্ধ মানুষের কাছে সেটা অপরাধ হয়ে দাঁড়ায়। বিভিন্ন উপদেশ দিতে থাকেন। আর যদি সে নমনীয় হয় তাহলে আসে সহানুভূতি। ঠিক তেমনটাই অবস্থা এখন নন্দিনী গাঙ্গুলী(Smart Didi Nandini)র। যার প্রকৃত নাম মমতা গাঙ্গুলী। তবে নন্দিনী হিসেবে তিনি মানুষের কাছে বেশি পরিচিত।
ইতিমধ্যে ফুড ব্লগার, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলাতে বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছেন স্মার্ট দিদি নন্দিনী। দোকানে সাধারণ মানুষের থেকে তাদের ভিড় বেশি আজকাল। নন্দিনীর হাতের রান্না পাত পেরে খাচ্ছেন তারা। আঞ্চলের তিন নম্বর কয়লাঘাত এলাকার ফুটপাতে এক পাইস হোটেল চালায় নন্দিনী এবং তার বাবা মা। যে দোকানটি আবার তাদের নিজের নয়। করোনা কালে দু বছর ধরে এই হোটেল চালিয়েছেন তিনি। জিন্স টপ পরা নন্দিনী নিজে হাতে রান্নাও করেন আবার পরিবেশনও করেন প্রতিদিন। গুজরাটের এক নামি হোটেলের শেষ ছিলেন তিনি। তবে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ে সেখানে কাজ পাননি তিনি। পেয়েছিলেন নিজের যোগ্যতায়। কিন্তু করোনার সময় সেই মোটা মাইনের চাকরিতে সমস্যা দেখা দেয়।
তাই ফিরে আসেন কলকাতাতে। এসে জানতে পারেন তার বাবার ব্যবসাতেও মার খেয়েছে। কোন মতে পুঁজি সম্বল করে তিন নম্বর কয়লাঘাট এলাকাতে আবার একটি ভাতের হোটেল খুলেছিলেন। জানিয়েছেন এমনও দিন গেছে যখন বউনি হয়নি তাদের। খাবার ফেলে দিতে হয়েছে। আবার কখনো নন্দিনীর পরামর্শে শিয়ালদহের আশেপাশের ভিক্ষা জীবীদের বিতরণ করা হয়েছে সেই সব খাবার।
ধীরে ধীরে হোটেলে বিক্রি বাড়তে থাকে বাড়তে থাকে খদ্দের। মাঝে মাঝে দোকানের কাজে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন তাদের মাও। কিন্তু নন্দিনী তখনও জানতেন না আর কয়েক দিনের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যাবেন তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে। চলতি বছর দস্য জানুয়ারি আবার বাবা মাকে নিয়ে গুজরাটে নতুন কাজের সন্ধানে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু তিনি যাননি। ২৩-২৪ ডিসেম্বর নাগাদ ছবিটা হঠাৎ করে বদলে গিয়েছে। ভাইরাল হয়ে গিয়েছেন তিনি। তাই না গিয়ে সিদ্ধান্ত নেন এই ছোট হোটেলকে নিয়েই থাকবেন তিনি।
কিন্তু এটি যে তার সমস্যা কমেছে এমনটা নয়। জানা গিয়েছে দোকানটি তাদের নিজেদের নয়। ভাড়া নেওয়া হয়েছে ।দোকানের পেছনে গত দু’বছর ধরে মানসিক এবং শারীরিক পরিশ্রম করেছেন। নিজেদের যাবতীয় সেভিংস দিয়ে দিয়েছেন কিন্তু এই মুহূর্তে তাদের বলা হচ্ছে এই দোকানটি ছেড়ে দিতে। দিতে বলায় ভবিষ্যতে কোথায় যাবেন কি করবেন তা ভেবে কাঁদতে শুরু করেছেন নন্দিনী।
এর মাঝে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে নন্দিনীর সঙ্গে এক খদ্দেরের ঝগড়া। সেটারও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কিছু ইউটিউবার এসে তাকে জিজ্ঞাসা করেছেন দলের মতো অবস্থা হলে তিনি কি করবেন। নিত্যদিন এই ঝগড়ার ভিডিও নিয়ে ট্রোল হচ্ছেন তিনি। এমনকি রাত দুটোর সময় ফোন করে ইউটিউব বা জিজ্ঞেস করছি ঝগড়ার আসল কারণটা কি। এগুলো কি সত্যিই মানা যায়?
তবে আপাতত নন্দিনী চিন্তা নতুন কোনো স্থানে যেতে হলে সামান্য মূলধনটুকু নেই তাদের। কোথায় যাবেন তারা। কোন মিরাকেলের আশায় বসে রয়েছে নন্দিনী।
View this post on Instagram